কান্না করা কি স্বাস্থ্যের জন্য উপকার না ক্ষতিকর? কান্নারও রয়েছে স্বাস্থ্য উপকারিতা!
মানুষ নানা কারণে কাঁদে। আনন্দ-বেদনা, দু:খ-কষ্ট এবং যন্ত্রণায় মানুষ বেশি কাঁদে। হতাশা, ব্যর্থতা, বঞ্চনা, অসহায়ত্বও মানুষকে কাঁদায়। অনেকে আবার অন্যের দু:খ-কষ্ট-বেদনা দেখে কাঁদে। আবার কেউ কেউ কান্না দেখেও কাঁদে। মনোবিদরা জানিয়েছে, কান্না মন ও শরীর দুইয়ের জন্যই ভালো। তাই কান্না পেলে তা আটকানোর প্রয়োজন নেই। বরং কেঁদে নেয়াটাই ভালো।
কান্নার উপকারিতা
হাসি-কান্না সবই আমাদের অনুভূতির প্রকাশ। প্রতিটি মানুষ আনন্দ পেলে হেসে থাকে। আর দু:খ পেলে কাঁদে। অনেক ক্ষেত্রে মানুষ আনন্দ পেলেও কেঁদে ফেলেন। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, আবেগের বহি:প্রকাশ হিসেবে আমরা নানা সময় কেঁদে থাকি। এই কান্নায় আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যে নানা রকম প্রভাব ফেলে। তবে কান্নায় বেশ উপকারিতাও রয়েছে।
(ক) কাঁদলে চোখ পরিষ্কার হয়
কাঁদলে আমাদের চোখ থেকে পানি বের হয়। ফলে চোখ থেকে নানা ধরণের দূষিত পদার্থ বের হয়ে যায়। পরিবেশ দূষণের কারণে আমাদের চোখে নানা দূষিত পদার্থ (ধুলা-বালি, ধোঁয়া) প্রবেশ করে থাকে। কান্নার ফলে তা চোখের মণি আর চোখের পাতা ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করে দেয়। তাই কাঁদলে চোখ পরিষ্কার রাখতে আর দৃষ্টি পরিষ্কার করতে সাহায্য করে থাকে।
(খ) কান্নায় ব্যাকটেরিয়া তাড়ায়
চোখের পানি অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়া ও অ্যান্টি-ভাইরাস হিসেবে কাজ করে থাকে। রাস্তা-ঘাটে, বাস-ট্রাকে চলার পথে সারাদিন কতো ধুলো-বালি চোখের ভেতরে জমে থাকে। এগুলোর মাধ্যমে আমাদের চোখে নানা রকম ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধতে পারে। কিন্তু কান্নার ফলে এসব ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস জীবাণু ধ্বংস করতে খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই কান্নায় জীবাণু দূর হয়।
(গ) মন ভালো রাখে
মনের মধ্যে চেপে রাখা কষ্ট যদি কান্নার মাধ্যমে বেরিয়ে আসে তাহলে মন হালকা হয়। এই আবেগের অশ্রু আপনার মন ভালো রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে যারা খুব সহজে কান্না করে চোখের জল ফেলতে পারে তারা সহজেই অবসাদ বা একাকিত্বের সাথে খুব সহজেই মোকাবিলা করতে পারেন। কান্নার ফলে আমাদের দেহে এনডোরফিন নামক এক কেমিক্যাল নি:সৃত হয় এবং দুশ্চিন্তা কম হয়। তাই কান্না করলে আমাদের মন ভালো থাকে।
(ঘ) মানসিকভাবে শক্তিশালী রাখে
মানুষ একমাত্র প্রাণী যে আবেগে কাঁদতে পারে। কান্না শুধু মানুষের অনন্য বৈশিষ্ট্যেই নয়। কান্নায় আছে মানসিকভাবে মানুষকে সুস্থ রাখার বিশাল শক্তি। মন খুলে কাঁদলে আমাদের সুস্থ এবং চাপমুক্ত থাকতে সাহায্য করে। কান্না মানুষের কোনো দুর্বলতা নয়। বরং এটা একটা শক্তি। তাই মানসিকভাবে শক্তিশালী থাকতে কাঁদার সময় মন খুলে কাঁদুন। দরকার হলে হাউমাউ করে কাঁদুন। অন্যের সামনে কাঁদলে সমস্যা হলে বাথরুমে গিয়ে বা মিউজিক ছেড়ে দিয়ে কাঁদুন। কষ্ট কখনো বুকের ভেতরে পুষে রাখবেন না।
(ঙ) মনোভাব পরিবর্তন করে
কান্নার ফলে মানুষের মনোভাব পরিবর্তন হয়। কান্নার পর মনে এবং শরীরে এক ধরণের বড় প্রশান্তি চলে আসে। কারণ কাঁদলে শরীর থেকে স্ট্রেস হরমোন বেরিয়ে যায়। আর এজন্যই কান্না করলে মন হাল্কা হয়ে যায়। গবেষকরা জানায় যে, চোখের জলের সঙ্গে মানুষের শরীর থেকে ক্ষতিকারক পদার্থ বেরিয়ে যায়। এতে করে আমাদের মনের ভেতরে এক প্রকার পরিচ্ছন্ন ভাব তৈরি হয়। ফলে ভালো লাগার সৃষ্টি করে এবং মনোভাব পরিবর্তন হয়।
(চ) কান্নায় হতাশা দূর করে
কান্না হতাশা দূর করতে সহায়তা করে। মন খুলে কাঁদলে আপনার হয়তো অবস্থার কোনো পরিবর্তন হবে না। কিন্তু আপনার হতাশা দূর করতে সাহায্য করবে। একটি সাময়িক প্রশান্তির জন্য কান্না আপনার জন্য হতে পারে একটি ভালো মানের ঔষধ। মানুষ রেগে গেলে অনেক সময় ভুল কিছু করে বসে। রাগ কমানোর উত্তম রাস্তাই হলো কান্না। এটি আপনার সকল প্রকার হতাশা দূর করবে।
FAQS-
# কান্নার উপকারিতা কি কি?
=>কান্না এক রকম অনুভূতি যা সকলে প্রকাশ করতে পারে না। কেউ একা একা কান্না করে থাকে। আবার কেউ সকলের সামনে কান্না করে। তবে নাকি কান্নার তেমন কোনো গুরুত্ব পাওয়া যায় না। কিছু মানুষ শুধু নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য কথায় কথায় কান্না করে। অন্যদিকে এমন কিছু মানুষ আছে যারা নিজেদের অনুভূতি গুলো সকলের সামনে প্রকাশ করতে পারে না।
আবার খুব জোরে কান্না করতেও পারে না। স্বাভাবিক ভাবে এরা খুব মনে কষ্টে ভোগে। অন্তত কিছু সময়ের জন্য হলেও একা একা কান্না করা উচিৎ। এতে আপনার মন হালকা হবে। তাই কষ্ট পেলে অবশ্যই কান্না করা উচিৎ। কান্না মানুষিক চাপ কমায় এবং মাথা ঠান্ডা রাখে।
# কান্না কেনো স্বাস্থ্যের জন্য ভালো?
=>চোখের জল চোখ পরিষ্কার ও আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে। দৃষ্টি উন্নত করে। কান্না চোখকে আর্দ্র রেখে দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখতে সহায়তা করে। কান্না শরীরের স্ট্রেস হরমোন বের করার একটি ভালো উপায়। কান্নার পর মানসিক চাপ অনেকটা কম অনুভূত হয়।
# কষ্ট পেলে চোখ দিয়ে পানি বের হয় কেনো?
=>কান্না মানুষকে তাদের অনুভূতি প্রকাশ করতে সহায়তা করে। তাছাড়া, কান্নার শরীরের উপর একটি শারীরবৃত্তীয় প্রভাব ফেলে, যেমন নিউরোকেমিক্যাল পদার্থ মুক্ত করে আমাদের মেজাজ উন্নত ও স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে। যখন আমারা কষ্ট, বেদনা বা আনন্দে অশ্রু ফেলে আমাদের অনূভুতির বহিঃপ্রকাশ করি, তখন কান্না একটি মানসিক অবস্থার একটি মানসিক প্রতিক্রিয়া সম্পুর্ণ করে।
# কান্না করলে মন হালকা হয় এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা কি?
=>কান্না করলে মানুষের মন হালকা হয়। বৈজ্ঞানিক গবেষণা থেকে প্রমাণিত যে, কাঁদার পরে লোকেরা শারীরিক ও মানসিভাবে উভয়ই ভাল বোধ করে এবং যারা চোখের জল চেপে রাখে তারা আরও খারাপ অনুভব করে।
শেষ কথা
আমাদের জীবনটা আসলে কান্নায় ঘেরা। আমাদের জীবনটা শুরু হয় কান্না দিয়ে। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মানুষ নানা সময় নানা কারণে কান্না করে থাকে। কান্নাবিদদের মতে, সব মানুষই যদি নিয়ম করে কাঁদতে পারতো তাহলে দেশে হার্ট-অ্যাটাকের ঘটনা অনেক কমে যেতো। মানুষ অনেক ক্ষেত্রে বুকের জ্বালা বুকে গোপন করে রাখে। এর ফলে তাদের আত্মা ভেতরে ভেতরে কষ্ট পায়। হৃদযন্ত্রের উপর অনেক বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়। কান্নায় সবচেয়ে বেশি উপকার হয় চোখের।
কান্নায় অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়া ও অ্যান্টি-ভাইরাস হিসেবে কাজ করে থাকে। কান্নায় মনও ভালো করে। কেউ যদি পরবর্তীতে বলে কান্না করো না ধৈর্য্য ধারণ করো তাহলে সেটা না শোনাই উচিত হবে। কারণ মনের ভার প্রকাশে এবং মনকে হালকা করার ক্ষেত্রে কান্না খুবই শক্তিশালী মাধ্যম। আরও জানলে অবাক হবেন, কান্নার মাধ্যমে শরীরের ওজন কমে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কান্নার ফলে শরীর থেকে ক্যালরি বার্ন হয়। এ কারণেই তার মাধ্যমে শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমে যায়। তাই কান্না পেলে মন খুলে কাঁদুন। সুস্থ থাকুন।
# কান্না # কীভাবে সুন্দর করে কথা বলব? সুন্দর করে কথা বলার উপায়
Its like you read my mind! You seem to know a lot about this, such as you wrote the e book in it or something.
I think that you just could do with some p.c.
to power the message home a bit, however other than that, this is wonderful blog.
An excellent read. I will definitely be back.
Good post. I learn something totally new and challenging on blogs
I stumbleupon on a daily basis. It will always be helpful to read through content from other
authors and practice a little something from their web sites.
[…] […]
SeiFUWCOhycDxPp