কিয়ামত কি? কিয়ামতের আলামত সমূহ
কিয়ামতের আলামতের হলো মুসলিম বিশ্বাসীদের অনুমান করার সাহায্য করা যে কিয়ামতের আসন্নতা সম্পর্কে আল্লাহর সূচনা এবং স্বীকৃতি দেওয়া। এই আলামতগুলি ধরাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে কুরআন এবং হাদিসে। কিয়ামতের আলামত ব্যতিক্রমশূন্য ও অদ্ভুত সূচনা সহ মানব জীবনের নানান দিক থেকে অপরিন্তিক পরিবর্তনের সূচনা করে। এই আলামতগুলি মুসলিম সমাজে অবিচ্ছিন্ন বিশ্বাসের উৎপাদনে সহায়ক এবং তাদের আত্মসমর্পণ ও তাওহীদের উন্নতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে গণ্য হয়।
কিয়ামতের আলামতের মধ্যে অন্যত্র রূপান্তর, অপরিণামী দুনিয়ার পরিণাম, মৃত্যু, মহাবিশ্বের নিয়মিত বিনশ্বর, দিনের বাদের জীবনের সমাপ্তি, ধর্মীয় সাক্ষরতার প্রচার ও অন্যান্য ঘটনাগুলি উল্লেখযোগ্য। এই রকম বিভিন্ন আলামতের উল্লেখের মাধ্যমে ইসলামী শাস্তির মহান কতৃপক্ষ এবং পরিণামগুলির মধ্যে অবিরাম বিশ্বাস বিবেচনা করা হয়।
কিয়ামত কখন সংঘটিত হবে?
কিয়ামতের সময় ইসলামের ধারাবাহিক বিশ্বাসে আল্লাহ তাআলা জানেন। কুরআনে বর্ণিত হয়েছে যে, কিয়ামতের সময় একটি স্মৃতিমত্রে আল্লাহর নিকট তার সময় প্রকাশ হয়ে আসবে। কুরআনে বলা হয়েছে:
“তোমরা কি দাবী করতে পারো, তোমাদের দোষের সময়ের কবে আসবে?” – সূরা যাসিন, আয়াত 47
তবে, হাদিসে উল্লেখিত হয়েছে যে কিয়ামতের সময় বিষয়ে আল্লাহর প্রিয় রাসুল (সা:) তাদের কোনো নির্দিষ্ট তারিখ বা সময় উল্লেখ করেননি। তবে, হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে কিয়ামতের সময় আসতে পারে অবশ্যই অপ্রত্যাশিতভাবে।
ইসলামী শাস্তি গ্রন্থে এবং হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে কিয়ামতের আসন্নতা এবং সময়ের সূচনা আল্লাহর অগ্রাধিকারে রয়েছে। এই প্রস্তুতি যে সময়ে ঘটে, সে বিষয়ে কোনো মানবীয় অগ্রাধিকার নেই। তাই ইসলামী ধারাবাহিকতা অনুসারে বেশিরভাগ মুসলিম বিশ্বাসী এ সম্পর্কে বিস্ময় করে এবং তাদের প্রকৃতির ক্ষমতার প্রতি ভক্তি ও পরামর্শ মেনে চলে।
কিয়ামত কাকে বলে?
কিয়ামত ইসলামের ধারাবাহিক বিশ্বাসে মৃত্যুর পরে মুসলিম বিশ্বাসীদের পুনর্জীবনের পর প্রত্যক্ষ নামে জীবন বা পুনরুত্থানের সময় বলা হয়। এটি মুসলিমদের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় বিশ্বাস, যা কুরআন এবং হাদিসের মাধ্যমে উল্লেখিত হয়েছে।
কিয়ামতের দিনে মুসলিম বিশ্বাসীদের মৃত্যুর পর মুক্তিদাতা আল্লাহ তাআলা তাদের পুনর্জীবনের মাধ্যমে সমাধান করবেন। এই দিনে সকল মানবজাতি মৃত্যুর পর আবার জীবনে প্রত্যক্ষ হবে এবং তাদের আদালতের জন্য অদ্যাপিত হবে। এই জীবনের পুনর্জাগরণে তাদের পূর্ববর্তী কর্মফলের মূল্যায়ন ও আজীবন অপরাধের জন্য দায়ী হতে হবে।
কিয়ামতের দিনে আল্লাহ তাআলা সমস্ত মানবজাতির উপর ন্যায় ও বিচার করবেন, এবং সমস্ত মানুষকে তাদের কর্মফল অনুযায়ী বাকি আদালত দিয়ে সাজা বা পুরস্কার দেবেন। এই দিনে মুসলিম বিশ্বাসীদের পুনর্জীবনের সময় হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যেখানে তারা সর্বনাশের পর সমস্ত মানবিক কার্যকরী হবেন এবং তাদের কর্মফলের বিচার হবে।
কিয়ামতের বিবরণ
কিয়ামতের আলামত ইসলামের মূল বিষয়ের একটি। এটি ইসলামের ধর্মীয় বিশ্বাসে গভীরভাবে নিবেদিত। কিয়ামত হল ধর্মীয় ধারণাতে, শেষ দিনে মুসলিমদের মৃত্যুর পর পুনর্জীবনের পরিকল্পনা। ইসলামে বিশ্বাস করা হয়ে থাকে যে, কিয়ামতের আগে মৃত্যুর পর সকল মানুষ পুনর্জীবিত হবে এবং তাদের কাছে তাদের কাজের জন্য দায়িত্ব প্রদান হবে।
কিয়ামতের দিনে মুসলিম বিশ্বাসীদের মৃত্যুর পর মুক্তিদাতা আল্লাহ তাআলা তাদের পুনর্জীবনের মাধ্যমে সমাধান করবেন। এই দিনে সকল মানবজাতি মৃত্যুর পর আবার জীবনে প্রত্যক্ষ হবে এবং তাদের আদালতের জন্য অদ্যাপিত হবে। এই জীবনের পুনর্জাগরণে তাদের পূর্ববর্তী কর্মফলের মূল্যায়ন ও আজীবন অপরাধের জন্য দায়ী হতে হবে।
কিয়ামতের দিনে আল্লাহ তাআলা সমস্ত মানবজাতির উপর ন্যায় ও বিচার করবেন, এবং সমস্ত মানুষকে তাদের কর্মফল অনুযায়ী বাকি আদালত দিয়ে সাজা বা পুরস্কার দেবেন। এই দিনে মুসলিম বিশ্বাসীদের পুনর্জীবনের সময় হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যেখানে তারা সর্বনাশের পর সমস্ত মানবিক কার্যকরী হবেন এবং তাদের কর্মফলের বিচার হবে।
কিয়ামতের আলামত নিয়ে ইসলামী শাস্ত্র ও হাদিস গ্রন্থগুলিতে বিভিন্ন পর্যায়ের উল্লেখ রয়েছে। এগুলির মধ্যে অন্যতম বিশিষ্ট আলামত হল:
১। মহিষূরের বাঁকে নগনের বা বিদালের মত শঙ্কুতলার মূর্তির আবির্ভাব।
২। ধূলোয় আবার আকাশে প্রস্থ করা।
৩। ধূমকে দেখা যাবে যাতে পৃথিবীর অংশগুলি পুরোপুরি ধুলোয় মাঝে ঢালা হবে।
৪। বিস্ময় করণীয় গজবের আবির্ভাব।
৫। সূর্যের গভীরে অসীম গহির অন্ধকার।
৬। দাঁতের মত কটবতের আবির্ভাব।
৭। বৃষ্টির উপদেশ পানির আবির্ভাব।
৮। গজনের বাঁকে কুঁড়ির মত গোধূলির আবির্ভাব।
৯। সূর্যের গরজন
১০। নজমের পদার্থ কোলেয়া ও অন্যান্য আকাশী ঘটনা
১১। ধর্মীয় সাক্ষরতার প্রচার
১২। মহাশক্তির উত্থান
১৩। লোকেশন এবং আত্মহত্যার উপদ্রব বৃদ্ধি।
১৪। বিশাল দুর্যোগ এবং আপাতদৃষ্টিতে বিপর্যয়কারী ঘটনাবলীর বৃদ্ধি।
১৫। মানবসম্পদের ক্ষতি এবং নিরাপত্তার অভাবের কারণে মানবজাতির প্রাণী দুর্বল হয়ে পড়া।
১৬। ধর্মীয় ও নৈতিক অবস্থার অবনতি এবং অধিকারের লক্ষ্যে ক্ষমতাবাদের বৃদ্ধি।
১৭। ইসলামের প্রচারের বৃদ্ধি এবং ধর্মীয় উন্নতির অবস্থা।
১৮। ত্রিশজন ভণ্ড ব্যাক্তি নবুয়তের দাবী করবে এবং এর পর ভন্ড মসীহ দাজ্জালের আবির্ভাব হবে।
১৯। ভুমিকম্পের সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পাবে।
২০। সুর্য পশ্চিম দিক থেকে উদিত হবে [ এটি কোনো প্রতীকি বর্ণনা নয়, কিন্তু এটি সর্ব শেষ অথবা শেষের দিকের আলামত হিসাবে পরিচিত ]
এই রকম বিভিন্ন আলামতের উল্লেখের মাধ্যমে ইসলামী শাস্তির মহান কতৃপক্ষ এবং পরিণামগুলির মধ্যে অবিরাম বিশ্বাস বিবেচনা করে।ইসলামী শাস্তি গ্রন্থে এবং হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে কিয়ামতের আসন্নতা এবং সময়ের সূচনা আল্লাহর অগ্রাধিকারে রয়েছে। এই প্রস্তুতি যে সময়ে ঘটে, সে বিষয়ে কোনো মানবীয় অগ্রাধিকার নেই। তাই ইসলামী ধারাবাহিকতা অনুসারে বেশিরভাগ মুসলিম বিশ্বাসী এ সম্পর্কে বিস্ময় করে এবং তাদের প্রকৃতির ক্ষমতার প্রতি ভক্তি ও পরামর্শ মেনে চলে।
FAQs-
# কিয়ামতের আলামত কি?
=> কিয়ামতের আলামত বলতে কিয়ামত (দিবসের) আগে ঘটবে এমন কিছু ঘটনা ও লক্ষণ বোঝানো হয় যা ইসলামে উল্লেখ আছে। আলামতগুলো দুই ধরণের হতে পারে: ছোট (সাধারণ) আলামত ও বড় (বিশেষ) আলামত।
# ছোট আলামতগুলো কি কি?
=> ছোট আলামতগুলো হলো এমন কিছু ঘটনা যা সময়ের সাথে সাথে ঘটতে থাকবে এবং সেগুলো কিয়ামতের দিকে ধাবিত হবে। এর মধ্যে কয়েকটি হলো:
- ধর্মীয় জ্ঞান হ্রাস ও অজ্ঞতা বৃদ্ধি।
- মিথ্যা ও প্রতারণা বৃদ্ধি।
- আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন হওয়া।
- অশ্লীলতা ও ব্যভিচার বৃদ্ধি।
- সুদ ও ঘুষ গ্রহণের প্রচলন।
# বড় আলামতগুলো কি কি?
=> বড় আলামতগুলো হলো এমন কিছু ঘটনা যা কিয়ামতের অতি নিকটবর্তী সময়ে ঘটবে। এর মধ্যে কয়েকটি হলো:
- ইমাম মাহদির আগমন।
- ঈসা (আ.) এর পুনরাগমন।
- দাজ্জালের আগমন।
- যুজ ও মাজুজের আগমন।
- সূর্যের পশ্চিম দিক থেকে উদয় হওয়া।
- ধোঁয়ার আসা।
# কিয়ামতের আলামত সম্পর্কে জানা কেন গুরুত্বপূর্ণ?
=> কিয়ামতের আলামত সম্পর্কে জানা মুসলমানদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কারণ এগুলো আমাদের জন্য সতর্কবাণী এবং প্রস্তুতির সময়সীমা হিসেবে কাজ করে। এটি আমাদেরকে জীবনের ক্ষণস্থায়ীতা ও পরকালের দায়িত্বশীলতার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
# আল-কোরআন ও হাদিসে কিয়ামতের আলামত সম্পর্কে কি বলা হয়েছে?
=> আল-কোরআন ও হাদিসে কিয়ামতের আলামত সম্পর্কে বহু উল্লেখ রয়েছে। কোরআনের বিভিন্ন সূরায় এবং বিভিন্ন হাদিসে নবী মুহাম্মদ (সা.) কিয়ামতের আলামত সম্পর্কে আলোচনা করেছেন।
# কিয়ামতের আলামত কি বাস্তবে ঘটতে দেখা গেছে?
=> অনেক মুসলমান বিশ্বাস করেন যে ছোট আলামতগুলোর অনেকগুলো ইতোমধ্যে ঘটেছে বা ঘটছে। বড় আলামতগুলো এখনও ঘটেনি, এবং এগুলোর ঘটনার সময় কেউ নিশ্চিতভাবে বলতে পারে না।
শেষ কথা
সম্পূর্ণ উত্তরের মাধ্যমে বলতে গেলে, কিয়ামতের আলামত হলো ঐ ঘটনাগুলি বা সংগতিগুলি যেগুলো ইসলামের ধারাবাহিক বিশ্বাসে কিয়ামতের আসন্নতা ও বিচারের পরিবর্তন সূচনা করে। এই আলামতগুলি ধরাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে কুরআন এবং হাদিসে। কিয়ামতের আলামত ব্যতিক্রমশূন্য ও অদ্ভুত সূচনা সহ মানব জীবনের নানান দিক থেকে অপরিন্তিক পরিবর্তনের সূচনা করে। এই আলামতগুলি মুসলিম সমাজে অবিচ্ছিন্ন বিশ্বাসের উৎপাদনে সহায়ক এবং তাদের আত্মসমর্পণ ও তাওহীদের উন্নতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে গণ্য হয়।
পরিশেষে এটা অবশ্যই প্রণিধান যোগ্য যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাহুয়ালায়হিয়াসসাল্লাম বলেছেন যে, আলামত গুলো যখন প্রকাশ পাবে তখন এমন ভাবে তা আসতে থাকবে যেমন কোনো মালা থেকে একটি পুঁতি খসে পরলে আর পরবর্তি পুঁতি গুলো একের পর এক পুর্ববর্তি গুলোর অনুগামী হয়।