কিভাবে ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠা যায়? ব্যর্থতা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর উপায়

কিভাবে ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠা যায়? ব্যর্থতা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর উপায়

 

মানুষ তার জীবনে চলার পথে অনেক সময় হোঁচট খায়। এই হোঁচট খাওয়া বলতে পড়ে যাওয়াকে বোঝায় না। এই হোঁচট খাওয়া বলতে ব্যর্থ হওয়াকে বোঝায়। ব্যর্থ হওয়ার পর অনেকেই ঘুরে দাঁড়াতে পারে না। আবার অনেকে ব্যর্থতা কাটিয়ে সফলতার দিকে ফিরে আসতে পারে। ব্যর্থতা থেকে সফলতার উপায়। ভয়কে জয় করি আর ব্যর্থতাকে না বলি। যারা ব্যর্থতাকে কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারে না তাদেরকে নিয়েই আজকের মূল আলোচনা।

ব্যর্থতা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর উপায়:

ব্যর্থ হওয়ার পর ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সর্বপ্রথম যে বিষয় নিয়ে চিন্তা করা উচিত তা হলো আপনি কি কারণে ব্যর্থ হয়েছেন তা খুঁজে বের করুন। আপনি অতীতে যেসব কারণে ব্যর্থ হয়েছেন ওই কারণগুলো যাতে পরবর্তীতে না ঘটে আপনার জীবনে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। আপনার অতীত নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করে সময় নষ্ট না করে সামনে দিকে এগিয়ে যাওয়ার উপায় খুঁজুন। 

লক্ষ্য নির্ধারণ করা

কোনো কাজ শুরু করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা উচিত। কাজ শুরু করার ক্ষেত্রে সাধারণত যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয় তা হলো নিজের জন্য সঠিক কোনটি। ধরুন, আপনি একজন ফ্রিল্যান্সার হবেন। এর জন্য আপনাকে প্রথমে লক্ষ্য স্থির করে কাজ শুরু করতে হবে। আর আপনি যদি তা না করে কাজ শুরু করার আগেই টাকা ইনকামের কথা চিন্তা করেন তাহলে তো হবে না। আপনি আজ কোন অবস্থানে আছেন সেটা কোনো ব্যাপার না, আপনি দশ বছর পর নিজেকে কোন অবস্থানে দেখতে চান সেই সিদ্ধান্ত নেওয়াটা অত্যন্ত জরুরী। তাই আপনাকে পরিবেশ পরিস্থিতি অনুযায়ী লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে।

নিজের যোগ্যতার উপর আত্মবিশ্বাস

নিজের যোগ্যতার উপর আত্মবিশ্বাস রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আপনার যোগ্যতাই আপনাকে সফল হওয়াতে সাহায্য করবে। আপনি যদি নিজের ক্যারিয়ারের স্বপ্ন নিয়ে ভয় না পান তাহলে সেটা আপনার যোগ্য নয়। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষের সমস্যা হলো তারা হতাশায় ভোগে। আমি কি পারবো? আমার দ্বারা কি এই কাজ হবে?

সমাজের ভেতরে অনেক মানুষ আছে যারা আপনাকে থামানোর চেষ্টা করবে, অনুৎসাহিত করবে। আপনার নিজের উৎসাহ বাড়ানোর জন্য মহান ব্যক্তিদের জীবনী এবং তাদের সংগ্রামের গল্প সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারেন। এর ফলে আপনার নিজের উপরে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পেতে থাকবে।

সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ

জীবনে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করাটাই সফলতার মূল উৎস। একটি সঠিক সিদ্ধান্ত আপনার জীবন বদলে দিতে পারে। আবার একটি ভূল সিদ্ধান্ত আপনার জীবন আপনার জীবন অন্ধকারে ঢেকে দিতে পারে। অনেক সফল ব্যক্তির মুখে শোনা যায় তারা বাথরুমে বসে জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেটা শুনে আপনি হয়তো ভাবছেন দিনের বেশির ভাগ সময়টা বাথরুমে কাটানো উচিত। এটা ভূল ধারণা। কারণ প্রত্যেকটা মানুষেরই চিন্তা-ভাবনা আলাদা।

সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য সময়, পরিবেশ, মেজাজ অনেকাংশে নির্ভর করে থাকে। তাই এমন একটা সময় বেছে নেওয়া উচিত যখন আপনার মন-মেজাজ এবং পরিবেশ সবই আপনার অনুকূলে থাকে। এক্ষেত্রে সিদ্ধান্তটি সঠিক হওয়ার সম্ভাবনা ৮০% বেশি থাকে। 

নিজের সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব দেওয়া

নিজের সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব দেওয়া প্রত্যেকটা মানুষের উচিত। হোক সেটা সঠিক কিংবা ভুল। একটি রিসার্চ বলছে, যেসব মানুষ ‍নিজের চিন্তাশক্তি ব্যবহার করে না তারা জীবনের অধিকাংশ সময়ে ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকে। আমরা ক্যারিয়ার গঠনে বেশিরভাগ সময় নিজের সিদ্ধান্তের চাইতে পরিবারের সিদ্ধান্তকেই বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি। যার জন্য পরবর্তীতে টাকা-পয়সা অনেক উপার্জন করলেও সেই আনন্দ খুঁজে পাওয়া যায় না।

মনে হয় কি যেনো নেই আমার মাঝে। কোনো বাবা-মা যদিও আমাদের ক্ষতি চায় না তবুও সন্তানের ইচ্ছা-অনিচ্ছার বিষয়টা গুরুত্ব দেওয়া উচিত। নিজে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকলে পরবর্তীতে কাজে ব্যর্থ হলে নিজেকে সান্তনা দেওয়া সহজ হয়।

নিজের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে জানুন

কোন কাজে আপনি পারদর্শী সেটা জনা না থাকলে স্থায়ী সাফল্যের মুখ দেখাটা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। নিজের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে। মানুষ তার স্বপ্নের চাইতেও বড়। প্রত্যেক মানুষের অধিকার আছে স্বপ্ন দেখার। কিন্তু স্বপ্নটা অবশ্যই যৌক্তিক হওয়া প্রয়োজন। একজন অন্ধ ব্যক্তির জন্য প্লেন চালানোর স্বপ্ন দেখাটা অবশ্যই ভূল সিদ্ধান্ত।

তাই আপনাকে আগে নিজের দক্ষতার জায়গা সম্পর্কে জানতে হবে। এক্ষেত্রে সুবিধা হলো সেই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে আপনি খুব সহজেই সফলতার মুখ দেখতে পারবেন। নিজের সীমাবদ্ধতাকে মেনে নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলুন এবং সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন।

FAQS-

# ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠার উপায় কি?

=>আমাদের জীবনটা হলো সফলতা আর বিফলতার সম্বিলিত রূপ। আমার মতে মানুষের যেহেতু চাহিদার শেষ নেই তাই সফলতার কোনো সঙ্গা নেই। সহজ কথায় ব্যর্থতা থেকে কিছু একটা পেলেন সেটা হলো আপনার অভিঙ্গতা। সঠিক ভাবে লেগে থাকলে আপনার চাহিদা অনুযায়ী সফল হতে পারবেন।
# ব্যর্থতা কাকে বলে?
=>জীবনে চলতে গেলে বাঁধা বিপত্তি আসবে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু তাতেই যে হাল ছেড়ে দিতে হবে তার কোনো মানে আছে। আমি নিজেই এমন অনেক মানুষ দেখেছি যারা জীবনে জয়ী হতে পারতো বা জয়ী হওয়ার যোগ্যতা রাখে তারা অল্পতেই হতাশ হয়ে যায়। এটিই ছিল তাদের ব্যর্থতা। একটি কাজ একবার না পারলে শত বার চেষ্টা করতে তো অসুবিধা নেই।
# কিভাবে ব্যর্থতার ভয় কাটিয়ে উঠা যায়?
=>ব্যর্থতা বলতে কি বুঝায়? আপনি যখন কোনো কিছুর আশা করে আশাহত হলেন তখন তাকেই ব্যর্থতা বলে আপনি ভেবে নিচ্ছেন। যখন ব্যর্থতা কথাটা আসছে তখনই তার আপেক্ষিক পরিমাপ এসে যায়। মানে আপনি পুরো ব্যর্থ নাকি আংশিক ব্যর্থ। ব্যর্থতার একমাত্র অব্যর্থ ওষুধ হলো কোনো কিছুর আশা না করে কাজ করে যাওয়া। তাহলে আপনার ব্যর্থতার ভয়টা আর থাকবে না।
# ব্যর্থতার ভয়কে কিভাবে জয় করা যায়?
=>গতি বাড়িয়ে দিয়ে, আপনি যত বেশি গতিতে ছুটতে পারবেন ব্যর্থতা এবং সাফল্য তত বেশি আপেক্ষিক হয়ে যাবে। আপনার গতি যত বাড়বে , ফলাফল লাভের পরিমানও তত বাড়তে থাকবে। একটু বয়স্ক হলে না হয় ব্যর্থতা এবং সফলতার হিসাব করবেন , এখন শুধু ফলাফল সংগ্রহ করে যান।

শেষ কথা

পরিশেষে একটি কথাই বলতে চাই, আর তা হলো সফলতা আর ব্যর্থতা মিলেই জীবন। জীবনে চলার পথটা খুবই কঠিন। জীবনে প্রতিটি মোড় বিপদে পরিপূর্ণ। ব্যর্থতায় হাল ছেড়ে দিলে চলবে না। ব্যর্থতা জীবনের সবকিছু নয়। ব্যস্ততা কাটিয়ে সফল হওয়ার জন্য কাজ করতে হবে। ব্যর্থতা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর নামই হল জীবন। আর আমার প্রতিভা আমাকেই বিকশিত করতে হবে। অন্য কেউ এসে আমার প্রতিভা বিকশিত করে দিবে না। তাই ভয় না পেয়ে এখনি কাজ শুরু করে দিতে হবে। কঠিন পরিশ্রম, দৃঢ় মনোবল  এবং আত্মবিশ্বাস আমাদের সফলতার চূড়া নিতে পারে।

# আপনি কি নিজের উপর বিশ্বাস রাখেন? নিজের উপর বিশ্বাস রাখো! # কিভাবে রাগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়? রাগ নিয়ন্ত্রণ করার উপায়

Related posts

Leave a Comment