Pohela Baisakh History.পহেলা বৈশাখের ইতিহাস
পহেলা বৈশাখ বাংলা সালের প্রথম মাস ও প্রথম দিনের নাম। এটি বাংলা সনাতন পঞ্জিকায় অনুযায়ী নতুন বছরের আগমনকে প্রতিষ্ঠা করে। পহেলা বৈশাখ বাংলা সনাতন পঞ্জিকায় বৈশাখ মাসের ১ তারিখ অনুযায়ী উল্লেখ করা হয়।
পহেলা বৈশাখের উৎপত্তি বাংলা সনাতন পঞ্জিকার ইতিহাস সম্পর্কে প্রধানতঃ দুটি মতানুযায়ী বিভাজিত। একটি মত অনুযায়ী পহেলা বৈশাখের উৎপত্তি পূর্ব ভারতীয় মহাজাতির অনুপ্রান্তে হিন্দু ধর্মের পূজা ও উৎসবের একটি অনুষ্ঠানের উৎপত্তি হয়েছিল। অন্য মত অনুযায়ী পহেলা বৈশাখের উৎপত্তি সুসিদ্ধ সেনাপতি শাহ সুজা’ এর প্রতীক্ষিত অভিষেকের উৎপত্তি হয়েছিল।
বাংলা নববর্ষের উৎস হিন্দু ধর্মের অন্যান্য ধর্মীয় উৎসগুলির মতে বহুদূরের অতীতে পড়ে। বাংলা নববর্ষ প্রায়ই আপ্রিল মাসের শেষে অথবা মে মাসের শুরুতে পড়ে।
বাংলা নববর্ষের উৎস প্রাচীন হিন্দু সংস্কৃতি ও দর্শনের অধীনে অন্য ধর্মীয় উৎসগুলির মতে বহুদূরের অতীতে পড়ে। বাংলা নববর্ষ প্রায়ই আপ্রিল মাসের শেষে অথবা মে মাসের শুরুতে পড়ে।
পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য বাংলা নববর্ষের আগমনকে উৎসাহী উদ্বেগী এবং উৎসবপূর্ণ ভাবে প্রতিষ্ঠা করা। এটি একটি বৈশিষ্ট্যমূলক উৎসব যা সমাজের সম্পর্ক ও সংস্কৃতির একটি অসীম অংশ হিসাবে গড়ে তোলে।
আধুনিক বিশ্বে পহেলা বৈশাখের উৎসাব বাংলাদেশ, ভারতের পশ্চিম বাংলা, পশ্চিম ও পূর্ব ভারতের বাংলা সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসাবে গণ্য হয়েছে।
পহেলা বৈশাখের আধুনিক ইতিহাস
পহেলা বৈশাখের আধুনিক ইতিহাস বিভিন্ন ঘটনা ও প্রতিষ্ঠানের সম্পর্কে সাধারণ বাংলাদেশী সমাজের জীবনে গভীর প্রভাব ফেলেছে। এই ইতিহাসের মাঝে বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, আর্থিক এবং সাংস্কৃতিক পরিবর্তন রয়েছে। নিম্নলিখিত কিছু ঘটনা এবং প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পহেলা বৈশাখের আধুনিক ইতিহাসের সম্পর্কে কয়েকটি উদাহরণ রয়েছে:
১। বাংলাদেশে পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষের উপলক্ষে বড় একটি উৎসব হিসাবে পালন করা হয়। এই উৎসবে বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা এবং বিনোদনের কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।
২। পহেলা বৈশাখ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই দিনে বাজারে বৃদ্ধি এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রমের প্রতিষ্ঠান হয়।
৩। বাংলাদেশে পহেলা বৈশাখের আধুনিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হল ১৯৭১ সালের বিমান দুর্ঘটনা। এই দিনে পাকিস্তানী বিমান একটি পানিতে পড়ে নামে এবং অনেক মানুষের মৃত্যু হয়।
৪। পহেলা বৈশাখ বাংলাদেশে সাধারণত একটি রাজনৈতিক মিলন দিন। এই দিনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সংগঠনের মুখোমুখি দেখা যায়।
৫। বাংলাদেশে পহেলা বৈশাখে আনেক ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এই দিনে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রোগ্রাম, মিউজিক ও ড্যান্স প্রোগ্রাম, চিত্র প্রদর্শন ইত্যাদি অনুষ্ঠিত হয়।
এই হিসাবে, পহেলা বৈশাখের আধুনিক ইতিহাস বাংলাদেশের সামাজিক, আর্থিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসাবে গণ্য।
পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন
পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন বাংলা সন্তানদের জন্য একটি অত্যন্ত উত্সাহজনক উৎসব। এই দিনটি উত্তর ভারতে, পূর্ব ভারতে, বাংলাদেশে, এবং বিশ্বের বাংলা সাংস্কৃতিক অঞ্চলে প্রচলিত। এই উদ্যাপনের মূল উদ্দেশ্য হল নতুন বছরের আগমনকে উৎসাহী ও উৎসবপূর্ণ ভাবে স্বাগত জানানো। নিম্নলিখিত পদক্ষেপে পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন করা হয়:
১. পুতুল পালন এবং মেলা: পহেলা বৈশাখে গান, নাচ, এবং রঙের মেলায় সবাই মিলে উৎসব উপভোগ করেন। এই মেলাতে অনেক স্থানীয় খাবার, পুতুল, খেলনা, এবং সাংস্কৃতিক পণ্য বিক্রি করা হয়।
২. রংমেলা ও প্রদর্শনী: বিভিন্ন স্থানে পহেলা বৈশাখে রঙমেলা অনুষ্ঠিত হয়। মানুষেরা একে অপরকে রং মারি, গোলাপের পানি ফেলে, গান বাজায়, নাচে গাইয়ে উদ্যাপন করেন। প্রদর্শনীতে বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়, যেমন গান, নৃত্য, নাটক ইত্যাদি।
৩. কৃষি উৎপাদনের উৎসব: পহেলা বৈশাখ হলো একটি কৃষি উৎপাদনের উৎসব ও অন্যান্য প্রাকৃতিক উৎপাদনের উৎসব। গ্রামের মানুষেরা প্রধানত আম, ফল, মিষ্টি, সবজি, ইত্যাদির উৎপাদনের উৎসব মনায়।
৪. সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান: বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় পহেলা বৈশাখে। এই অনুষ্ঠানে সাহিত্য, সংগীত, নাট্য, নৃত্য, এবং অন্যান্য কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।
৫. ধার্মিক উৎসব: ধার্মিক দৃষ্টিকোন থেকে পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন বেশ গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে এই দিনটি বুদ্ধিস্ট, হিন্দু, এবং ইসলামিক ধর্মের অনুযায়ী উৎসব হিসাবে পালন করে থাকে।
পহেলা বৈশাখের উদযাপনে বাঙালি সংস্কৃতি এবং ঐতিহাসিক ঐক্য প্রকাশ পায়। এই দিনে মানুষেরা বাগানে বাগানে পহেলা বৈশাখের উদযাপনের উপভোগ করে, বিভিন্ন বিনোদনে অংশ নিয়ে থাকে। মুখ্যতঃ গান, নাচ, এবং খাবারের উৎসব প্রধান উদ্যোগগুলো। কিছু প্রধান বাজার এবং বাগানে মেলা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে মানুষেরা একসাথে মিলিত হয়ে উৎসবের আত্মাভিমান প্রকাশ করে।
বাঙালি সংস্কৃতির এই অপূর্ব উৎসবে সাধারণত সাদা, লাল, হলুদ, নীল, সবুজ ইত্যাদি রং ব্যবহার করা হয়। সম্প্রতি পহেলা বৈশাখের উদযাপনে রঙিন পাট ও জামদানী হাতের মাথা এবং এই রঙিন পুতুলগুলো সাধারণ দৃশ্য।
পহেলা বৈশাখের উদযাপনে বিভিন্ন ধরনের পানীয় ও খাবারের অনুষ্ঠান অনেকগুলো জনপ্রিয় হয়, যেমন পাঁচালী, মিষ্টি, মিষ্টি দোহার, ফুচকা, চটপটি, লাড্ডু, সন্দেশ, পায়েস, পিঠা, ভর্তা, সাগ, ভাত, মাছ, মাংস, ইত্যাদি। এছাড়াও, পহেলা বৈশাখের দিনে মানুষেরা আপনি একে অপরের সাথে পাঁচালী খাওয়ার উপভোগ করেন, যা একটি আনন্দমূলক অভিজ্ঞতা।
আধুনিকতার ছোঁয়ায় বর্ষবরণের অনুষ্ঠানমালা
বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আধুনিক ইতিহাস পহেলা বৈশাখে আর্থিক ও সামাজিক দিক দিয়ে অনেকটা পরিবর্তন এনেছে। এটি বিশেষত অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন হিসাবে উল্লেখ করা যায়।
বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে পহেলা বৈশাখে বিশেষভাবে বর্ণাঢ্য বাজার ও বাণিজ্য উপযোগী প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন ব্যবসায়ী এই দিনে তাদের দোকানের জন্য বিশেষ সাজানো করে, বিশেষ ছাড় এবং উপহার প্রদানের মাধ্যমে গ্রাহকদের আকর্ষণ করতে চেষ্টা করেন। এছাড়া, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বিনোদনের অনেক আয়োজন করা হয়। এই আয়োজনগুলোর মধ্যে সংগীত অনুষ্ঠান, নাচের প্রদর্শন, ভাষন সম্মেলন, বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, আর্ট এক্সিবিশন ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।
এই দিনে ব্যবসায়ীদের অফার এবং বিশেষ ছাড়ের মাধ্যমে মানুষেরা বিভিন্ন পণ্য কেনার জন্য আকর্ষিত হন। বিশেষভাবে পোশাক, পানি, মিষ্টি, খাবারের জন্য বিশেষ ছাড় প্রদানের মাধ্যমে বিভিন্ন দোকানগুলো আকর্ষণীয় করে মানুষেরা।
এই ছাড় এবং অফারের মাধ্যমে গ্রাহকদের ভালো সার্ভিস প্রদানের চেষ্টা করা হয়, যা সামাজিক ও আর্থিক অনুভূতি সৃষ্টি করে। প্রতিষ্ঠান এবং ব্যবসায়ীরা সামাজিক উৎসবে অংশ নেওয়া বা তাদের ব্যবসার প্রচার এবং বিপণন উন্নত করা মাধ্যমে অনেক বড় সমাজিক উৎসবের অনুষ্ঠান অবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসাবে প্রকাশ পায়।
বর্ষবরণের অন্যতম অনুষঙ্গ হলো পান্তা-ইলিশ। যেন এ পান্তা-ইলিশ না হলে আর পহেলা বৈশাখের কোনো আমেজই থাকে না। বেশ তো এ সুযোগে রমনার লেকের পাড়েই অনেকে বসে পড়েন ইলিশ-পান্তা খেতে। সঙ্গে থাকে কাঁচামরিচ। মানে সম্পূর্ণভাবেই বাঙালিয়ানার পরিচয় দিতে যেন ব্যস্ত সবাই।
অতএব, বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আধুনিক সমাজে আর্থিক, সামাজিক ও বাণিজ্যিক দিক থেকে অনেক পরিবর্তন ঘটে এবং সমাজের মানুষের মধ্যে একটি উত্সাহ সৃষ্টি হয়।
শেষ কথা
সব মিলিয়ে বাংলা নববর্ষ শুধুমাত্র বিনোদনের উৎস নয়; বরং বাঙালি জাতির শত-সহস্র বছরের পুনঃজাগরণের প্রতীতি। এর নিরিখে প্রতি বছর কালবৈশাখী ঝড়ের মাঝেও বাঙালির উৎসব মুখরতা পাতালের বুকে শক্ত ভীত গড়ে বিদ্যমান থাকার বিকশিত স্বকীয়তার জানান দেয়। সর্বস্তরের বাঙালিদের জীবিকার দ্যোতনার বৈশাখী মেলাগুলো সরবে আলিঙ্গন করে নেয় নতুন বছরকে। বিগত মলিন বছরের ভস্মের মাঝেই অঙ্কুরিদগম হয় নতুন বছরকে ধুয়ে মুছে সাফ করার অনুপ্রেরণার।
# কান্না করা কি স্বাস্থ্যের জন্য উপকার না ক্ষতিকর? কান্নারও রয়েছে স্বাস্থ্য উপকারিতা! # কিভাবে র্ফসা হওয়া যায়? কালো ত্বক ফর্সা করার উপায়