বাচ্চাদের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে চান? স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধির উপায়!

বাচ্চাদের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে চান? স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধির উপায়!

 

শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ ঠিকমতো না হলে তা স্মৃতিশক্তি সেভাবে গড়ে ওঠে না। স্মৃতিশক্তি ভালো হলে অনেককিছুই জয় করা সহজ হয়ে যায়। কোন বাবা-মা চায় না বলুন তো, যে তার সন্তান মেধাবী ও স্মার্ট হোক। স্মৃতি শক্তিশালী হলে নতুন জিনিস শিখতে এবং মুখস্ত করা সহজ হয়। সব শিশুর স্মৃতিশক্তি সমান হয় না। দুর্বল স্মৃতিশক্তির শিশুকে স্কুলে, খেলার মাঠে, বাসায় সব জায়গাতেই অনেক পরিশ্রম করতে। তাই তাদের আত্মবিশ্বাস দিন দিন কমতে থাকে। যাদের স্মৃতিশক্তি দুর্বল তাদের সেটি প্রখর করারও কিছু কৌশল আছে। এমন অনেক খাবার আছে যা খেলে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে আপনার শিশুর। স্মৃতিশক্তি হবে প্রখর।

বাচ্চাদের স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধির উপায়

স্মৃতিশক্তি শিশুর জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। স্মৃতিশক্তি ভালো হলে সে স্কুলে কিংবা যেকোন জায়গায় ভালো করতে পারবে। শিশুদের ছোটবেলা থেকেই একটু বাড়তি যত্ন নেওয়া উচিত। শিশুর প্রতিদিনের খাবারে এমন কিছু পুষ্টিকর খাবার রাখা উচিত যা তার মস্তিষ্ক সচল রাখতে, স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। তবে এমন কিছু উপায় আছে যার মাধ্যমে শিশুর স্মৃতিশক্তি বাড়িয়ে তোলা সম্ভব। যদি শিশুটির বিশেষ কোনো সমস্যা না থাকে তবে এই টিপসগুলো তার স্মৃতিশক্তি ও মস্তিষ্ককে আরও তীক্ষ্ণ করতে সাহায্য করবে। বাচ্চাদের স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

মায়ের দুধ

একেবারে ছোটবেলা থেকেই শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশের প্রতি নজর দেওয়া উচিত। বাচ্চাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে মায়ের বুকের দুধ কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। মায়ের বুকের দুধে অনেক পুষ্টি থাকে। তাই প্রত্যেকটি বাচ্চাকে অন্তত ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শুধু বুকের দুধ খাওয়ান। মায়ের দুধ খাওয়ালেই বাচ্চা হয়ে উঠবে স্মার্ট ও মেধাবী।

সবুজ শাক-সবজি

শিশুর খাদ্যতালিকায় ভিটামিন, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, খনিজ ও ফাইবার সমৃদ্ধ রাখতে হবে। সবুজ শাক-সবজি বিটা ক্যারোটিন বাড়িয়ে তোলে আপনার শিশুর মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা। সবুজ শাক-সবজিতে থাকা এ, বি, সি, ই এবং কে ভিটামিন একটি শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ ও সামগ্রিক স্বাস্থ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সবজির মধ্যে পালং শাক, ধনেপাতা, পুদিনা পাতা, সরিষা পাতা ইত্যাদি রাখতে পারেন।

বাদাম ও বীজ

সারা দিন উদ্যমী থাকার জন্য শিশুর পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাদের ডায়েটে বাদাম ও বিভিন্ন ধরনের বীজ রাখা যেতে পারে। এগুলো শিশুর শক্তি সরবরাহ করে এবং মস্তিষ্ক সক্রিয় রাখতে সহায়তা করে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে ২৮ দিন নির্দিষ্ট সময়ে বাদাম খেলে যেকোন বিষয় বা ঘটনা মনে রাখতে উল্লেখযোগ্যভাবে ভূমিকা রাখে।

সামদ্রিক মাছ

মাছ শিশুর মস্তিষ্ক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমরা মাছে ভাতে বাঙালী। মস্তিষ্কে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিডের প্রায় ৪০% হচ্ছে ডিএইচএ। যার প্রধান উৎস হচ্ছে সামদ্রিক মাছ ও মাছের তেল। তাই  আপনার শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে খাদ্য তালিকায় অবশ্যই সপ্তাহে তিন দিন মাছ রাখুন।

ডিম

শিশুদের মস্তিষ্ক বিকাশে ডিম সক্রিয় ভূমিকা পালন করে থাকে। শিশুর ৮ মাস বয়স থেকে ডিমের কুসুম দিয়ে সূচনা করা উচিত। এই ডিম থেকেই প্রয়োজনীয় আয়রন পাবে। ডিম মস্তিষ্ক এবং স্নায়ু কোষগুলো সক্রিয় রাখে। পাশাপাশি শেখার শক্তি এবং স্মৃতিশক্তি বাড়িয়ে তোলে। নিয়মিত ডিম খেলে শরীরের অক্সিজেন সরবরাহ ঠিক থাকবে। শিশুর চিন্তাশক্তি ও বুদ্ধিমত্তার বিকাশ ঘটবে। তাই শিশুকে অবশ্যই ডিম খাওয়াবেন।

পর্যাপ্ত ঘুম

স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘুম। ঘুম মানুষের জন্য প্রচুর পরিমাণে উপকার করে থাকে। একজন মানুষের পর্যাপ্ত ঘুম না হলে অনেক রকম সমস্যা দেখা দেয়। ঠিক তেমনি শিশুর জন্য পর্যাপ্ত ঘুম প্রয়োজন। একটি শিশু প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ ঘন্টা গভীর ঘুম দিতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। শিশুর ঘুমের জন্য সময়সূচি রাখা যেতে পারে। খেয়াল রাখতে হবে শিশু যেন সময়মতো বিছানায় যায় এবং ঘুমায়। এক গবেষণায় দেখা গেছে, সকালে দেখা কার্টুনগুলো মনে রাখতে বিকেলের ঘুম শিশুদের ক্ষেত্রে ১০% অবদান রাখে।

FAQS-

#বাচ্চাদের স্মৃতিশক্তির বৃদ্ধির উপায় কি?

=>শিশুরা অন্যদের সাথে কথা বলে এবং তাদের পরিবেশের মধ্যে জীবনের ঘটনাগুলি অনুভব করে স্মৃতি সম্পর্কে শিখে। শিশুরা যদি এমন ঘটনা অনুভব করে যা তারা সম্পূর্ণরূপে বুঝতে পারে না তবে তাদের ঘটনাটি মনে রাখার সম্ভাবনা কম থাকে।

#কি করলে বাচ্চাদের স্মৃতিশক্তি বাড়ে?

=>বাচ্চাদের স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর জন্য ওমেগা-৩ যুক্ত খাবার খাওয়ান। অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণের ফলে কলস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। কিন্তু সব চর্বি অস্বাস্থ্যকর নয়। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর জন্য।

#শিশুরা সহজে ভুলে যাওয়ার কারণ কি?

=>মানসিক চাপ এবং ঘুমের অভাব সহ বাচ্চাদের ভুলে যাওয়ার অনেক কারণ রয়েছে। ক্ষুধার্ত থাকাও একটি বড় প্রভাব ফেলতে পারে। কিন্তু কখনও কখনও যখন বাচ্চাদের তথ্য মনে রাখতে সমস্যা হয়, তখন তারা কার্যক্ষম স্মৃতি নামক একটি দক্ষতার সাথে লড়াই করতে পারে।

#স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর কার্যকর উপায় কি?

=>সবাই যা যা বলেছেন সব সহ আমি বলব জিংক খেতে হবে, পেট ভরে খাবার খাওয়া যাবে না। সকাল সকাল ঘুমানো, সকাল সকাল ওঠা, সব কাজের পূর্বে সৃষ্টিকর্তার নাম স্মরন করা আর বাজে মেমোরি গুলো মাথা থেকে আউট করে স্পেস বাড়াতে হবে।

#স্মৃতিশক্তি বাড়াতে কি কি করণীয়?

=>ব্রুকলি, ফুলকপি, গাজরেও প্রচুর ফলেট ও ক্যারটিনয়েড আছে, যা মস্তিষ্ককে কর্মক্ষম করে তোলে। সামুদ্রিক মাছের তেলে ওমেগা-৩ ফ্যাট আছে যা মস্তিষ্কের জন্য খুবই উপকারী। নানা রকমের বাদাম যেমন আখরোট, চিনাবাদাম ও কাজুবাদামে আছে মেগা-৩, ওমেগা-৬ ফ্যাট, ভিটামিন বি-৬ এবং ভিটামিন ই। এগুলো স্মৃতিশক্তি ধরে রাখতে সাহায্য করে।

শেষ কথা

শিশুদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ানো, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি ও বুদ্ধিমত্তা বৃদ্ধি, দু:শ্চিন্তা হ্রাস এবং মনোযোগ ধরে রাখার ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শক্রমে কয়েকধরণের যোগব্যায়াম করা যায়।

সর্বোপরি মনে রাখা প্রয়োজন যে, কোন একটি নির্ধারিত ভেষজ উপাদান বা ঔষুধ শিশুর মনোযোগ, স্মৃতিশক্তি, বুদ্ধি বাড়াতে পারে না। সুষম খাদ্য, ব্যায়াম এবং সঠিক জীবন শৈলী ইত্যাদির সমন্বয়েই কেবল শিশুর স্মৃতিশক্তি এবং মনোযোগ বাড়ানো সম্ভব। 

# অতিরিক্ত দুধ খেলে কি হয়? দুধের উপকারিতা ও অপকারিতা # স্বাস্থ্যকর খাবার কি? স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার উপায়

Related posts

Leave a Comment