নতুনরা যেভাবে ফ্রিল্যান্সিং শিখবেন। ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং শুরু করার উপায়
বর্তমান বাংলাদেশে সবচেয়ে প্রচলিত একটি অর্থায়ন রাস্তা হলো ফ্রিল্যান্সিং। খুব অল্প সময়ের মধ্যে বর্তমান বিশ্বে বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং এর অবস্থান দ্বিতীয়। সারা পৃথিবীতে জুড়ে ডিজিটাল ইকোনোমির বাজার হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। বর্তমান বিশ্বে ফ্রিল্যান্সিং এ যে পরিমাণ কাজের সুযোগ রয়েছে তার চেয়েও বেশি দক্ষ ফ্রিল্যান্সারের অভাব রয়েছে। তাই সঠিক ভাবে কাজ শিখে দক্ষ কর্মী হতে পারলে যে পরিমাণ অর্থ আয় করা সম্ভব তা যে কাউকে চমকে দিতে পারে। প্রথমে আমরা ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করবো।
ফ্রিল্যান্সিং কি?
ফ্রিল্যান্সিং হলো মূলত একটি মুক্ত পেশা। সহজ কথায় কার উপর নির্ভরশীল না হয়ে মুক্ত এবং স্বাধীনভাবে কাজ করার সামর্থ্যকে মূলত ফ্রিল্যান্সিং বলা হয়। সহজ কথায় কাউকে ফ্রিল্যান্সিং পেশায় কাউকে আসতে হলে কোনো কাজের উপর দক্ষতা থাকতে হবে। আর দক্ষতা পাশাপাশি যদি কাজের অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে ফ্রিল্যান্সিং এ কাজ পেতে অনেক সুবিধা হয়।
নতুনরা যেভাবে ফ্রিল্যান্সিং শিখবেন
আমি মূলত ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য প্রথমে কম্পিউটার বা লেপটপ চালানোর কথা বলবো না। ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য বিশেষত যে জিনিসটির প্রয়োজন সেটি হলো আপনার স্কিল বা দক্ষতা। আপনি যেকোনো বিষয়ে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারেন। সেই বিষয়টা হলো একটা স্কিল। আপনাকে যেকোনো একটা কাজ জানতে হবে। ধরুন, আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইন করতে পারেন বা ভালো আর্টিকেল লিখতে পারেন। আপনি খুব সুন্দর করে যেকোনো ক্যাটাগরির আর্টিকেল লিখতে পারেন। আপনি খুবই ভালো দক্ষ এই আর্টিকেল লেখার উপর। তারপর আপনি কি করতে পারেন অনলাইনে বিভিন্ন মার্কেট প্লেস আছে সেখানে গিয়ে বলতে পারেন যে আমি খুব ভালো আর্টিকেল লিখতে পারি এবং আমি খুব দক্ষ এই বিষয়ে। আপনার দক্ষতা আছে বলেই আপনি বলতে পারলেন। তাই ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার আগে আপনাকে দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
দক্ষ ফ্রিল্যান্সাররা যেসব মার্কেটপ্লেসে কাজ করে
মোটামোটি ভাবে বাংলাদেশে যেসব বড় বড় ফ্রিল্যান্সার রয়েছে তারা মূলত বিভিন্ন মার্কেট প্লেসে কাজ করে থাকে। তার মধ্য থেকে কয়েকটি ভাল মার্কেট প্লেস সম্পর্কে আমরা আলোচনা করবো। যেগুলো নতুনদের জন্য খুব ভালো ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য সহায়তা করবো-
১। ফ্রিল্যান্সার ডট কম
বর্তমান সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় একটি মার্কেটপ্লেস হলো ফ্রিল্যান্সার ডট কম। এখানে ছোট বড় অনেক ধরণের কাজ রয়েছে। সেখান থেকে আপনাকে আপনার পছন্দ মতো কাজ বেঁচে নিতে হবে। তবে মনে রাখবেন আপনি যে বিষয়টিতে পারদর্শী সেই বিষয়টিকে বিট করবেন। তাহলে সফল হতে পারবেন।
২। ফাইবার ডট কম
যারা client কম খুঁজতে কম পছন্দ করেন তাদের জন্য ফাইবার একটি অন্যতম প্লাটফর্ম। ফাইবার ডট কম থেকে client নিজে আপনাকে খুঁজে কাজ দেবে। এখানেও সব ধরণের কাজ client আপনাকে দিয়ে থাকে। মাইক্রো জবের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় সাইট হলো ফাইবার।
৩। আপওয়ার্ক
বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যাপওয়ার্ক ডট কম। এখানেও আপনি আপনার মন মতো কাজ করতে পারবেন। নিজেকে যদি সবচেয়ে সফল এবং অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সার মনে করেন তাহলে আপনার জন্য জনপ্রিয় সাইট হলো টপটাল। এখানে অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সাররাই কাজ করে থাকেন।
মানসিক প্রস্তুতি গ্রহণ
তো ভাই আপনি ফ্রিল্যান্সিং শিখবেন তা নিয়ে আপনার প্রচুর আগ্রহ আছে। কিন্তু শিখতে শুরু করেন নি তাহলে কিভাবে হবে। আপনাকে শুরু করে দিতে হবে। আপনার কাছে যা ভালো লাগে তা দিয়ে শুরু করে দিতে হবে। আমি যে সমস্ত মার্কেটপ্লেস এর কথা বললাম তাই যে আপনাকে শিখতে হবে তা নয়। আপনার কাছে যা ভালো লাগে তাই আপনি করবেন। আপনি যদি মনে করে যে আমি ওয়েব সাইট ডিজাইন নিয়ে সফল হতে পারবো। হ্যাঁ আপনি তাই করবেন। আবার আপনি যদি মনে করেন যে ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে আমি সফল হতে পারবো তাহলে আপনি সেটাই করবেন। তবে একটি জিনিস কখনোই করবেন না যে আপনি কয়েক দিন ধরে ওয়েব সাইট ডিজাইন করে ডিজিটাল মার্কেটিং এ চলে গেছেন। একটা গাছকে যদি বার বার উঠে আরেক জায়গায় রোপন করেন তাহলে গাছটি কোনো দিন উপরে উঠবে না বা বাড়বে না। আপনাকে মনে রাখতে হবে আপনি যে বিষয়টিতে আছেন সেই বিষয়টিতে কোনো সফল ব্যক্তি আছে কি না? যদি থাকে তাহলে আপনি সেই বিষয়টি নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে থাকেন। সফলতা আসবেই।
তাহলে বন্ধুরা চলুন আর কতো দিন এভাবে চলতে থাকবে। আর কতো দিন আপনি ঘুরবেন। আপনাকে শিখতে হবে। তবে একটা কথা মনে রাখবে আপনি যে পেশায় আছেন সেই পেশা ঠিক রেখে ফ্রিল্যান্সিং পেশাটাকে শিখে যান। অনেকে মনে করেন ফ্রিল্যান্সিং পেশায় আসলেই মনে হয় লাখ লাখ টাকা ইনকাম করা যায়। এই ভূলটি কখনোই করবেন না। যখন দেখবেন যে আপনার ফ্রিল্যান্সিং এ ভালো একটি ক্যারিয়ার আসতেছে তখন গিয়ে আপনি চাকরি বা অন্য পেশা ছাড়বেন। বর্তমানে আপনাকে সেটা পার্ট টাইম জব হিসেবে নিয়ে হবে এবং সেটাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়ে আপনার দক্ষতা বাড়াতে হবে। যদি আপনি মনে করেন যে, ফ্রিল্যান্সিং আসলেই লাখ লাখ টাকা ইনকাম করা যায়। তাহলে আপনার জন্য ফ্রিল্যান্সিং নয়। আপনি ফ্রিল্যান্সিং ছেড়ে দেন। আপনাকে এই মানসিকতা নিয়ে আসতে হবে যে আমি শিখবোই। তাহলে আপনার ক্যারিয়ার সুন্দর হবে।
শেষ কথা
বাংলাদেশে বর্তমান পাঁচ লাখের বেশি মানুষ ফ্রিল্যান্সিং করে সফল হচ্ছে। তাহলে আপনি কেনো পারবেন না। আপনি এই চিন্তা ভাবনা কেনো নিয়েছে যে আমি পারবো না। যারা করতেছে তারা তো এলিয়েন না। তারাও তো মানুষ তাহলে আমি কেনো পারবো না। সুতরাং আপনার কাছে এখনো প্রচুর সময় রয়েছে ফ্রিল্যান্সিং এ ক্যারিয়ার ডেভলপ করার। আমাদের সরকার বর্তমানে প্রচুর সুযোগ দিয়ে নতুনদের ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য। তাই আসুন ফ্রিল্যান্সিং শিখি সুন্দর ক্যারিয়ার গড়ি।
# কিভাবে অনলাইন থেকে ইনকাম করবেন? অনলাইনে ইনকাম করার উপায় # ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো? ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার উপায়