শবে বরাত কি? শবে বরাতের ফজিলত
শবে বরাত ইসলামিক ধর্মে একটি মাহফিল বা রাত, যা বিশেষভাবে মুসলিম ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে উৎসব হিসেবে প্রচলিত। শবে বরাত সালাতের প্রেরণযোগ্য সময় হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি ইসলামী ক্যালেন্ডারের মাহে শাবানের চৌথ রাত অথবা শাবে বরাত হিসেবে পরিচিত।
বিভিন্ন ইসলামী হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে যে, শবে বরাতের রাতে আল্লাহ তাআলা মানুষদের মর্জানী দিয়ে সৃষ্টিতের প্রতি ক্ষমাপ্রার্থী হন। এটি মুসলিম ধর্মীয় সম্প্রদায়ে মর্যাদা রাখা হয়ে থাকে এবং অনেকে এই রাতে নামাজ পড়তে, কুরআন পাঠ করতে, দুআ করতে, কিতাব পড়তে এবং দান-সদকা দেতে পক্ষপাত করেন। এই রাতে সুন্দর আচরণ করা, মানবিক বন্ধুত্ব ও ভাইবোনের সঙ্গে সময় কাটানো ইসলামিক সমাজে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রগুচ্ছ।
তবে, এই রাতের প্রস্তুতি এবং উত্সব সম্পর্কে কোনও প্রামাণিক সূত্র খুঁজে পাওয়া যায় না, এবং এর প্রত্যাশিত ফজিলত সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত ও মতামত রয়েছে। অধিকাংশ মুসলিম ধর্মীয় বিদায়ী মেহের সম্প্রদায় এই রাতের প্রস্তুতি করে এবং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ রাত হিসেবে মানে নেয়। কিছু অন্যান্য মুসলিম ধর্মীয় সম্প্রদায় এই রাতের সাথে বিশেষ গুরুত্ব দেয় না।
শবে বরাতে অর্থ
ফারসি ‘শব’ অর্থ রাত, আর আরবি ‘বারাআত’ অর্থ মুক্তি। সুতরাং শবে বরাত অর্থ মুক্তির রজনী । হিজরি ক্যালেন্ডারের অষ্টম মাস হলো ‘শাবান’ মাস। এই শাবান মাসের চৌদ্দ তারিখ রাতে মহান আল্লাহ তায়ালা অসংখ্য মানুষকে মাফ করেন এবং জাহান্নাম থেকে মুক্ত করে দেন। এ কারণে এই রাতকে শবে বরাত বা মুক্তির রজনী বলা হয়।
শবে বরাত কি
শবে বরাত ইসলামিক ধর্মে একটি পবিত্র রাত যা মুসলিম সমাজের মধ্যে বিশেষ গুরুত্ব প্রাপ্ত হয়। এটি ইসলামী ক্যালেন্ডারের মাহে শাবানের চৌথ রাত অথবা শাবে বরাত হিসেবে পরিচিত। শবে বরাতে মুসলিম ব্রাদার সমাজের অধিকাংশ লোক বিশেষ ইবাদত ও প্রার্থনা করেন। এই রাতে মুসলিম বেশিরভাগ লোক নামাজ পড়ে, কুরআন পড়ে, দুআ ও তাসবীহ করে এবং কিছু পবিত্র কর্ম অত্যন্ত গুরুত্ব দেন। এছাড়াও, এই রাতে অনেকে দান-সদকা করতে পবিত্র কাজ করে এবং মানুষের মধ্যে ভাইবোনের সঙ্গে সহযোগিতা ও সম্পর্ক বাড়ানোর চেষ্টা করেন। এই রাতে মানে মনে করা হয় যে, আল্লাহ তাআলা মানুষদের মর্জানী দিয়ে সৃষ্টিতের প্রতি ক্ষমাপ্রার্থী হন। এটি একটি মুসলিমের জীবনে একটি পবিত্র রাত, যা প্রার্থনার ও ইবাদতের মাধ্যমে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে মনে করা হয়।
শবে বরাতে করণীয়
শবে বরাতে মুসলিম বানিজ্যিক প্রথা বা স্বাভাবিক বাধ্যতার বহুগুণ নেই, কিন্তু বিভিন্ন ধর্মীয় প্রথা এবং সুন্নত অনুসরণ করা সম্পর্কে মতামত থাকতে পারে। তবে, মুসলিম ধর্মীয় পর্যায়ে বিশেষ কিছু করণীয় নিম্নে উল্লিখিত-
নামাজ পড়া: শবে বরাতে নামাজের পর্যায়ে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়। মুসলিম সমাজের অধিকাংশ মানুষ শবে বরাতে আধুনিক জমির সহিত আশ্রুতি ও ইশলাহ নামাজ পড়ে।
কুরআন পাঠ করা: কুরআন একটি পবিত্র বই, এই রাতে এটি পড়ার উপযোগী সময়। শবে বরাতে মুসলিম সমাজের অনেকে কুরআন পড়ে ও তার মর্যাদা করে।
দুআ ও তাসবীহ: দুআ হলো আল্লাহর প্রার্থনা ও অনুরোধ করা। শবে বরাতে মুসলিম সমাজের অনেকে দুআ করে ও তাসবীহ পাঠ করে।
দান-সদকা: শবে বরাতে অনেকে দান-সদকা দেয়ার পবিত্র কাজ করেন, এটি একটি ভালো কাজ এবং অনেক পুণ্যদান মনে হয়।
মানুষের মধ্যে সহযোগিতা: এই রাতে সমাজের মানুষের মধ্যে ভাইবোনের সঙ্গে সহযোগিতা ও সম্পর্ক বাড়ানো গুরুত্বপূর্ণ।
শবে বরাতে উপরে উল্লিখিত করণীয় সম্পর্কে মুসলিম সমাজের বেশিরভাগ লোক মনোনিবেশ করেন, কিন্তু এটি একটি বাধ্যতামূলক প্রথা নয়। এই কার্যক্রমগুলি ব্যক্তিগত ভাবে আদান-প্রদানের সময় হিসেবে ধরা হয়।
শবে বরাতে বর্জনীয়
ইসলামিক ধর্মে শবে বরাতের দিনে মুসলিম সমাজের অনেক মানুষ নামাজ, কুরআন পাঠ, দুআ, ও দান-সদকা ইত্যাদি করে সময় কাটানোর পরামর্শ প্রাপ্ত করেন। এই রাতের প্রত্যাশিত ফজিলত মনে করে একে অত্যন্ত পবিত্র মানা হয়। তবে, ইসলামিক ধর্মে কোনো ফরজ নেই যা বাধ্যতামূলকভাবে শবে বরাতে করা উচিত বা করণীয় হিসেবে ধরা হয়েছে। এই রাতে সাধারণত নামাজ, কুরআনের তিলাওয়াত, দুআ, তাসবীহ, এবং দান-সদকা ইত্যাদির পরিচয় অনেক প্রচলিত কর্ম হিসেবে গণ্য। এছাড়াও, মানুষের মধ্যে ভাইবোনের সঙ্গে ভালো মনের আদান-প্রদান করা এবং অন্যান্য সমাজের সাথে সমাজিক কার্যক্রমে অংশ নেওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হয়। সকালে উঠে সুন্নত নামাজ পড়ার পর এই রাতে বিশেষ আমল করা সুপ্ত হয়। তবে, এই কার্যক্রমগুলি বাধ্যতামূলক নয় এবং সকলেরই নিজের মতামত ও বিশেষ অনুভুতি অনুযায়ী এগুলি করা স্বাভাবিক বলে ধরা হয়।
FAQS-
# শবে বরাতের রাতে কি কি আমল করতে হয়?
=>নামাজ আদায়, কোরআন তিলাওয়াত, তওবা, ইস্তিগফার ও ক্ষমাপ্রার্থনা ইত্যাদির মধ্য দিয়ে রাত কাটানো। শবে বরাতের সব আমলই নফল। আর নফল আমল নিজ নিজ ঘরে একাগ্রচিত্তে আদায় করাই উত্তম।
# শবে বরাতের ফজিলত কি?
=>ইসলামী বিশ্বাস মতে, এই রাতে আল্লাহ তার বান্দাদেরকে বিশেষভাবে ক্ষমা করেন। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের অনেক মুসলমান নফল ইবাদাতের মাধ্যমে শবে বরাত পালন করেন। অনেক অঞ্চলে, এই রাতে তাঁদের মৃত পূর্বপুরুষদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।
# শবে বরাত কেন পালন করা হয়?
=>শব-ই-বরাতের দিনে লোকেরা তাদের পূর্বপুরুষদের জন্য প্রার্থনা করে যারা এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছে । বিশ্বাস অনুসারে, এই রাতে আল্লাহ তার প্রিয়জনদের সাথে হিসাব মেটাতে আসেন। এতে করে আল্লাহ তাদের জন্য জান্নাতের দরজা খুলে দেন।
# শবে বরাতের হাদিস কি?
=>এই রাত সম্পর্কে একটি সহিহ হাদিস যা সুনানে ইবনে মাজাহ এর ইকামাতুস সালাত অধ্যায়ে আবু মুসা আল আশআরী থেকে বর্ণিত যে, রাসূল (স) বলেছেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ মধ্য শা’বানের রাতে সমস্ত সৃষ্টির দিকে বিশেষ নজর দেন ও মুশরিক (আল্লাহর সাথে শিরককারী) এবং মুশাহিন (হিংসুক) ব্যতীতসকলকে ক্ষমা করে দেন।
শেষ কথা
শবে বরাতের নির্দিষ্ট কোনো ইবাদত বা নামাজ নেই। এদিনে ফজিলত মনে করে ভালো কোনো খাবারের আয়োজন করা বা হালুয়া-রুটি খাওয়া উচিত নয়, এগুলো বিদআত, ইসলামে এর কোনো ভিত্তি নেই। এই রাতকে কেন্দ্র করে কোনোরকম আনন্দ উদযাপন, আতশবাজী করা, মসজিদে-কবরস্থানে আলোকসজ্জা করা এসবই বিদআত, এসমস্ত কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকা চাই। আল্লাহ আমাদের শবে বরাতের ফজিলত হাসিল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
# হাশরের ময়দান কোথায় হবে? হাশরের ময়দান # নারীর পর্দা। পর্দা নারীর অহংকার। কিভাবে পর্দা করতে হয়?
[…] শবে বরাত কি? শবে বরাতের ফজিলত […]