পবিত্র মাহে রমজান। মাহে রমজানের ফজিলত ও গুরুত্ব
ইসলামের মৌলিক পাঁচটি স্তম্ভ রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে রমজান মাসের রোজা অন্যতম ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিতীয় হিজরিতে কোরআনের আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা উম্মতের উপর রোজা ফরজ করেছেন। রহমত, মাগফেরাত আর নাজাতের বার্তা নিয়ে আসা রমজান নিঃসন্দেহে অন্যান্য মাস অপেক্ষা অধিক মর্যাদাপূর্ণ। এ মাসের অর্জিত জ্ঞান অন্য সকল মাসে প্রয়োগের মাধ্যমে আমাদের জীবন সুন্দর ও আলোকিত হয়ে ওঠে। ধর্মপ্রাণ মুসলিম হিসেবে আমাদের জীবনে রমজানের গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক বেশি।
রমজান ইসলামের একটি প্রধান মাস এবং এটি বাংলা উচ্চারণে “রময়ান” নামেও পরিচিত। এটি মুসলিমদের পবিত্র মাস হিসাবে পরিচিত এবং তার অনেক ফযিলত এবং গুরুত্ব রয়েছে। এই মাসে ইসলামি সমাজের বেশিরভাগ সদস্যরা রোযা রাখে, যা প্রতি দিনের সারা দিন পরিমিত খাদ্য এবং পান থেকে সম্পূর্ণ বিরতি অর্জন করা হয়। এই রোযার সময়ে মুসলিমদের অবশ্যই সকালের নামাজের পর হয়রানি বা শরাবের প্রস্তুতি এবং উপকরণের বিষয়ে সতর্ক হতে হবে। রমজানের ফযিলত ও গুরুত্ব নিম্নলিখিত-
আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয়তা
আল্লাহ রমজান মাসকে অত্যন্ত প্রিয় করেন এবং এটির সময়ে তাঁর রহমত, ক্ষমা, ও প্রদানের প্রতি বেশি ধারাবাহিকতা অনুভব করেন। ইসলামে বলা হয়েছে যে, রমজান মাস আল্লাহর বিশেষ কাছে অত্যন্ত প্রিয় এবং তাঁর অনেক বাধ্যতার উপর ভার আছে। এই মাসে মুসলিমদের আল্লাহর নিকট অত্যন্ত প্রিয়তা অর্জন করার জন্য বিভিন্ন ইবাদত এবং দানের অধিক প্রয়োজনীয়তা আছে। এছাড়াও, আল্লাহ এই মাসে মুসলিমদের অবশ্যই তাঁর পথে অত্যন্ত সচেতন এবং পরিশ্রমী হতে উত্সাহিত করেন। এই মাসে মুসলিমদের আল্লাহর কাছে নিজেদের মান প্রদর্শনের সুযোগ দেওয়া হয়। তাই রমজান মাস ইসলামিক সমাজের জীবনে একটি মুখ্য ও প্রিয় মাস হিসাবে বিবেচিত হয়।
আল্লাহর রহমতের মাস
হ্যাঁ, রমজান মাস ইসলামে আল্লাহর রহমতের একটি বিশেষভাবে অধিক প্রাপ্ত মাস হিসাবে পরিচিত। এই মাসে আল্লাহ তার অত্যন্ত মহান কৃপা এবং দয়ার প্রদান করেন এবং তার সম্পূর্ণ প্রজাতির মানুষের উপর তার অত্যন্ত রহমত ও পরিচয় করেন। ইসলামে বলা হয়েছে যে, রমজান মাসে আল্লাহ তার অত্যন্ত বড় রহমত এবং ক্ষমা প্রদান করেন এবং তার অত্যন্ত কাছে প্রায় সমস্ত দুঃখ ও দুঃশোক দূর করেন। এই মাসে মুসলিমদের আল্লাহর রহমতের কাছে অত্যন্ত প্রিয়তা অর্জন করার জন্য বিভিন্ন ইবাদত এবং দানের অধিক প্রয়োজনীয়তা আছে। এছাড়াও, আল্লাহ এই মাসে মুসলিমদের অবশ্যই তাঁর পথে অত্যন্ত সচেতন এবং পরিশ্রমী হতে উত্সাহিত করেন। এই মাসে মুসলিমদের আল্লাহর কাছে নিজেদের মান প্রদর্শনের সুযোগ দেওয়া হয়। তাই রমজান মাস ইসলামিক সমাজের জীবনে একটি মুখ্য ও প্রিয় মাস হিসাবে বিবেচিত হয়।
রমজান মাস দোয়া কবুলের মাস
হ্যাঁ, রমজান মাস ইসলামে দোয়া কবুলের মাস হিসাবে পরিচিত হয়ে থাকে। ইসলামে বিশ্বাস করা হয়ে থাকে যে, আল্লাহ রহমত এবং ক্ষমা এই মাসে বেশি প্রদান করেন এবং তার রহমতের দরজা তাদের প্রতি খোলা থাকে। মুসলিম সমাজের সদস্যরা এই মাসে অত্যন্ত কৃতজ্ঞতা এবং সমর্থন প্রদর্শন করেন এবং তাদের ঈমান ও আমলের প্রাপ্তির জন্য দোয়া করেন।
রমজান মাসে মুসলিমদের দোয়া কবুলের মাস হওয়ার কিছু কারণ নিম্নলিখিত হতে পারে:
দোয়ার উৎসবপূর্ণ অবকাশ: রমজান মাস ইসলামী সমাজে একটি মুখ্য মাস হিসাবে পরিচিত, যা পূর্ণিমা থেকে পূর্ণিমা পর্যন্ত দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সময় ব্যয় করে। এই সময়ে মুসলিমরা আল্লাহর কাছে তাদের ইচ্ছা এবং প্রার্থনা জানানোর জন্য অবকাশ পান।
কুরআন নাজিল হওয়ার মাস: রমজান মাসে কুরআন নাজিল হওয়া শুরু হয়েছিল, যা মুসলিমদের জন্য পবিত্র এবং আদর্শ সংগ্রহশালা হিসাবে গণ্য। এই মাসে মুসলিমরা কুরআনের অধ্যয়ন এবং তা প্রতি দিনের জীবনে প্রায় পড়ার পরিকল্পনা করেন।
সদাকাহ ও আহকাম এর প্রতি প্রতিষ্ঠিত উদাহরণ: রমজান মাস মুসলিমদের কাছে সদাকাহ এবং আহকামের প্রতি প্রতিষ্ঠিত উদাহরণ সরবরাহ করে, যা দোয়া কবুলের অন্যত্র সৃষ্টি করে।
সত্য অনুসারী ও অতিরিক্ত ইবাদত প্রদান: রমজান মাস মুসলিমদের জন্য সত্য অনুসারী এবং অতিরিক্ত ইবাদত প্রদান করে, যা তাদের দোয়া কবুলের অংশ হিসাবে বিবেচিত হয়।
এই সমস্ত কারণে, রমজান মাসকে ইসলামিক সমাজে দোয়া কবুলের মাস হিসাবে প্রশংসা করা হয়। মুসলিমদের প্রতি দিনের জীবনে এই মাসে বেশি দোয়া এবং ইবাদতের কারণে আল্লাহ তাদের দোয়া কবুল করেন এবং তাদের গুনাহগুলি ক্ষমা করেন।
রমজান ধৈর্য ও সবরের মাস
হ্যাঁ, রমজান মাস ইসলামিক সমাজে ধৈর্য এবং সবরের মাস হিসাবে পরিচিত হয়ে থাকে। রমজানে মুসলিমদের অত্যন্ত অধিক ধৈর্য এবং সবর প্রদর্শন করা প্রয়োজন। এই মাসে মুসলিম জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহিষ্ণুতা এবং ধৈর্যের জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান করে।
রমজানে রোজার মাস হিসাবে পরিচিত হয়, যা মুসলিমদের সকল ধর্মীয় কর্তব্যের মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই মাসে রোজার সময়ে মানুষের দৈনিক কাজের অধিকাংশ সীমিত হয়, যা মুসলিমদের অত্যন্ত ধৈর্য এবং সবরের মধ্যে একটি মাত্র সময় প্রদর্শন করে। রমজানে দিনের প্রায় পূর্ণিমা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মুসলিমদের স্নান, খাওয়া, পানীয় ও অন্যান্য জীবনযাত্রার কাজ সীমাবদ্ধ থাকে। এই সময়ে মুসলিমদের ধৈর্য এবং সবর প্রদর্শনের জন্য সক্ষম হতে হয়। তারা তাদের ধৈর্য এবং সবর দেখাতে বিভিন্ন ইবাদতে অংশ নেয়, যেমন প্রার্থনা, কুরআনের পঠন, চারিত্রিক ও আধ্যাত্মিক উন্নতির পথে প্রতিষ্ঠিত থাকে।
রমজান মাসে মুসলিম সমাজের জীবনে সহিষ্ণুতা, ধৈর্য এবং সবরের গুরুত্বপূর্ণ মাস হিসাবে পরিচিত হয়, যা তাদের আদর্শ এবং চরিত্রের উন্নতির সহায়ক হয়। রমজান মাসে মুসলিমদের এই গুণগুলি প্রশ্নিত এবং পরিপাটিত করার জন্য একটি অবিশ্বস্ত সুযোগ প্রদান করে, তাদের ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক প্রকল্পের উন্নতির জন্য সৃষ্টি করে।
কুরআনের অধ্যয়ন এবং শিক্ষার গুরুত্ব
কুরআনের অধ্যয়ন এবং শিক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং মুসলিম জীবনে একটি অবিচ্ছিন্ন অংশ। কুরআন ইসলামের পবিত্র গ্রন্থ হিসাবে মর্যাদা পেয়ে থাকে এবং এটি মুসলিম জীবনের সকল দিক নির্দেশ করে। কুরআনের অধ্যয়ন এবং শিক্ষা একে আরেকের সাথে অবিভাজ্যভাবে জড়িত রয়েছে এবং মুসলিম সমাজের উন্নতি ও উন্নতির পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কুরআনের অধ্যয়ন এবং শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিম্নলিখিত-
দিক বিপরীত ধারণা করতে সাহায্য করে: কুরআনের পঠন ও বোঝা মানুষকে তাদের জীবনে নেতিত্ব এবং ন্যায়ের দিকে এগিয়ে নেয়। এটি সঠিক ও ভ্রান্তিমুক্ত ধারণা গড়ে তোলা সাহায্য করে।
দিক স্পষ্ট করে: কুরআন মানুষকে জীবনের প্রত্যেকটি দিক স্পষ্ট করে এবং তাদেরকে আদর্শ ও নেতিত্ব প্রদান করে যাতে তারা আল্লাহর পথে সঠিক পথে চলতে পারে।
মোরাল ও চরিত্রের উন্নতির পথে প্রয়োজনীয়: কুরআন মানুষকে মোরাল ও চরিত্রের উন্নতির পথে প্রয়োজনীয় সূচনা এবং সমর্থন প্রদান করে। এটি মানুষের অত্যন্ত আদর্শ জীবনের ধারণা প্রদান করে।
আত্মবিশ্বাস এবং উন্নতির উত্স হিসাবে: কুরআন মানুষের আত্মবিশ্বাস ও উন্নতির উত্স হিসাবে কাজ করে এবং তাদেরকে নিজের মনের ভেতরে ভাল পরিবর্তনের প্রেরণা দেয়।
আধ্যাত্মিক বিকাশের জন্য আবশ্যক: কুরআন মানুষকে আধ্যাত্মিক বিকাশের পথে প্রবৃদ্ধি করে এবং তাদেরকে আল্লাহর প্রতি আরাধনার প্রেরণা দেয়।
এই কারণে, কুরআনের পঠন এবং শিক্ষা মুসলিমদের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রায় প্রতিদিনের জীবনে এটি প্রতিরোধ করা উচিত একটি কাজ। এটি মানুষের মোরাল ও আদর্শের স্থান প্রদান করে এবং তাদের আধ্যাত্মিক ও মানবিক উন্নতির পথে প্রেরণা দেয়।
আত্মনিরোগ ও আরোগ্য উন্নতি
রমজানে রোযা রাখার ফলে শারীরিক সুস্থতা এবং আরোগ্যের উন্নতি হয়। এটি মানুষের সমস্ত স্বাস্থ্য সম্পর্কে আরোগ্যকর পরিবর্তন আনে। রমজানে রোযা রাখার ফলে শারীরিক সুস্থতা এবং আরোগ্যের উন্নতি পাওয়া যেতে পারে কারণ:
পরিশ্রমের জন্য পরিশ্রম: রোজা রাখা মানে দিনের ব্যস্ত সময়ে খাওয়া-খাওয়ার অনুষ্ঠান থেকে মুক্তি পাওয়া। এটি শারীরিক অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে এবং ত্রিপ্তির পরিমাণ এবং সময় নিয়ন্ত্রণে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সাহায্য করতে পারে।
আত্মদীপ্তির প্রশিক্ষণ: রমজানে রোজা রাখার সময়ে মানব সমাজে বেশি ধারণা এবং ধৈর্যের মানসিকতা উত্থান করা হয়। মানুষ অত্যন্ত প্রতিরোধ প্রতিপাদন করে এবং দুর্বলতা ও নিরাপত্তার বিরুদ্ধে প্রতিস্থাপন করতে পারে।
স্বাস্থ্যকর খাবার পরিপাটি: রোজা রাখার সময়ে মানুষের খাবারের নির্বাচনে বেশি সতর্কতা অনুশীলন করা হয়। স্বাস্থ্যকর পুষ্টির খাবারের পরিপাটি করা হয় এবং পরিমিত করা হয়, যা শারীরিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সাহায্য করে।
নিয়মিত ইবাদত এবং ধ্যানের অনুষ্ঠান: রমজান মাসে মুসলিমদের নিয়মিত ইবাদত ও ধ্যানের অনুষ্ঠান বেশি করে সাধারণ সময়ের তুলনায় বেশি হয়। এই ইবাদত এবং ধ্যানের মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্য এবং আরোগ্যের উন্নতি হতে পারে।
রমজানে রোযা রাখার ফলে আরোগ্যের বিশেষ পরিবর্তন দেখা যেতে পারে কারণ এটি মানুষের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যকে উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে। রোজা রাখার সময়ে বিশেষভাবে খাবারের নিয়মিত পরিপাটিতের সাথে মিশ্রিত হয়ে থাকা এবং নিয়মিত ইবাদতের মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্য এবং আরোগ্য উন্নত হতে পারে।
শেষ কথা
আল্লাহ পাক আমাদের সকলের সিয়াম সাধনাকে কবুল করুন। আমাদের ভাল কাজগুলোকে আমাদের জন্য নাজাতের উসিলা হিসেবে কবুল করুন। হে আল্লাহ! সিয়াম পালনকারীদের সিয়াম কবুল করুন, দানকারীদের দান কবুল করুন, রাত্রে ইবাদতকারীদের ইবাদত কবুল করুন, প্রার্থনা কারীদের প্রার্থনা কবুল করুন, আমাদের পূর্বের এবং পরের গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দিন, এ মাস যেন আমাদের সকলের জন্য ক্ষমার মাস হয়। আমীন!
# মাহে রমজানের শুভেচ্ছা। রমজান সম্পর্কে হাদিস # শবে বরাত কি? শবে বরাতের ফজিলত
[…] […]