কিভাবে র্ফসা হওয়া যায়? কালো ত্বক ফর্সা করার উপায়

কিভাবে র্ফসা হওয়া যায়? কালো ত্বক ফর্সা করার উপায়

 

উজ্জল ফর্সা ত্বকের প্রতি দূর্বলতা সবারই রয়েছে। একজন মানুষের স্ব-যোগ্যতার মধ্যে তার গায়ের রংটিই বিবেচ্য। জন্মগতভাবে আমরা একেক জন এক এক রকম গায়ের রং পাই। কেউবা কালো, কেউবা শ্যামলা, কেউবা ফর্সা। গায়ের রং কালো হলে বা শ্যামলা হলে তা নিয়ে মন খারাপ থাকে অনেকেরই। আরেকটু উজ্জল ত্বক পাওয়ার আকাঙ্খা থাকে তাদের।

আবার জন্মগতভাবে ফর্সা ত্বক পেয়ে অনেকে হারাতে বসেন অনেকেই। তাই ত্বকের উজ্জলতা ধরে রাখতে বা রাতারাতি গায়ের রং ফর্সা করতে তখন নানা রকম ক্রিম ব্যবহার করে থাকেন। তবে বাজারে যেসব ক্রিম পাওয়া যায় তা যতোটা না ত্বকের ফর্সা হওয়ার কাজ করে থাকে তার চেয়ে বেশি ত্বকের ক্ষতি করে থাকে। তাই এসব ক্ষতিকারক ক্রিম ব্যবহার না করে প্রাকৃতিক উপায়ে সমাধান করুন। 

কালো ত্বক ফর্সা করার উপায়

গায়ের রং উজ্জ্বল বা ফর্সা হোক এই প্রত্যাশা সবারই। অনেকেই তো একধাপ এগিয়ে থাকেন। বাজার থেকে বিভিন্ন ধরনের ক্রিম ব্যবহার করতে শুরু করে দেয়। এতে করে আপনার ত্বক সাময়িক সময়ের জন্য ফর্সা হলেও পরবর্তীতে ত্বকের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি হয়ে যায়। এইসব প্রডাক্টের দাম অনেক বেশি হয়ে থাকে। তাই এক্ষেত্রে ঘরোয়া উপায় বেছে নেওয়াই শ্রেয়। কারণ ঘরোয়া উপায় ব্যবহার করলে ত্বকের ক্ষতি হওয়ার ভয় থাকে না।

১। লেবু

লেবু শরীরের জন্য প্রচুর উপকার করে থাকে। লেবু ছোট বড় সবাই বেশ পছন্দ করে থাকে। লেবুতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন-সি রয়েছে। লেবুর মতো প্রাকৃতিক ব্লিচিং শক্তি আর কোথাও পাওয়া যায় না। লেবু ত্বকের জন্য বেশ উপকারী। এটি যেমন ত্বকের দাগ দূর করে থাকে তেমনি ত্বক উজ্জল ও ফর্সা সুন্দর করে তুলে। একটা লেবু অর্ধেক কেটে মুখের কালো ত্বকের আক্রান্ত স্থানে লাগান এবং শুকানোর জন্য ১০-১২ মিনিট অপেক্ষা করুন। পরে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি সপ্তাহে তিন দিন ব্যবহার করুন। লেবুর ব্লিচিং উপাদান ত্বককে ভেতর থেকে দাগমুক্ত করে এবং সেই সঙ্গে রোদে পোড়া দাগ সহজেই দূর করে থাকে।

২। কমলা

ত্বক উজ্জল করার ফলাফল পেতে আপনি কমলা খোসার মাস্ক লাগাতে পারেন। কমলা লেবুর খোসা গুঁড়ো করে তার সাথে দুধ মিশিয়ে নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন। এটি সপ্তাহে ৩-৪ দিন ব্যবহার করতে পারেন। এটি নিয়মিত ব্যবহার করলে দ্রুত ফল পাবেন। তাই এটি অবশ্যই ব্যবহার করবেন। 

৩। হলুদ 

আদিকাল থেকেই রূপচর্চায় হলুদ ব্যবহার করার প্রচলন আছে এবং এখনও তা আছে। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে হলুদের একটি ফেইস প্যাক লাগাতে পারেন। এক চা চামুক হলুদের গুঁড়োর সঙ্গে সমপরিমাণ ওটমিল এবং লেবুর রস মিশিয়ে মুখে লাগান। ১৫ মিনিট রেখে তা ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে নিয়মিত ব্যবহার করলে এক মাসের মধ্যেই সুফল পেতে শুরু করবেন। ত্বকে ব্যবহারের পাশাপাশি খালি পেটে এক টুকরো কাঁচা হলুদের টুকরো খেতে পারলে শরীরের ভিতর থেকে টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে। 

৪। টক দই

দই আমাদের ত্বকের ক্ষুদ্র লোমকূপে জমে থাকা ময়লা দূর করতে সাহায্য করে। ফলে ত্বক ভিতর থেকে পরিষ্কার করে। নিয়মিত টক দই ব্যবহার করলে তা ত্বককে ফর্সা করে তোলে। দুই টেবিল পরিমাণ টক দই ও এক টেবিল পরিমাণ মধু নিন। এই দুই উপাদান ভালোভাবে মিশ্রণ করে পরিষ্কার ত্বকে ব্যবহার করুন। ১৫ মিনিট পর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বককে দ্রুত উজ্জল করে তুলবে। ত্বকে ব্যবহারের পাশাপাশি টক দই খেলেও উপকার পাবেন। 

৫। পাকা পেঁপে

পাকা পেঁপে একটি সুস্বাদু ফল। পাকা পেঁপে খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি রূপচর্চাতে অনেক বেশি ব্যবহার করা হয়। পাকা পেঁপে কালো দাগ দূর করতে অসাধারণ ভূমিকা রাখে। পাকা পেঁপে ও মধু এক সঙ্গে মিশিয়ে মাখলে তা প্রাকৃতিক ভাবে ত্বককে ব্লিচ করে থাকে। এতে মুখের দাগ দূর হবে এবং ত্বকের রং উজ্জলও হবে। এক্ষেত্রে পাকা পেঁপে ও লেবুর রস দিয়ে পেস্ট বানিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। ১৫ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে তা ধুয়ে ফেলুন। এতে তোমার ত্বকের দাগ দূর হয়ে যাবে সহজে। 

৬। টমেটো 

টমেটো ত্বকের দাগ কমিয়ে ত্বককে ফর্সা এবং ত্বককে উজ্জল করে তুলতে পারে। লাইকোপিন নামক উপাদান ত্বককে আর্দ্রতা বাড়াতে সাহায্য করে। ত্বকের উপর জমে থাকা মৃত কোষ দূর করে ত্বককে দ্রুত উজ্জল করে তুলে। দুটি টমেটো ও দুই চা চামচ লেবুর রস নিন। টমেটো ব্লেন্ড করে সবটুকু রস বের করে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এবার এটি ভালোভাবে মুখে লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিট। শুকিয়ে গেলে তা পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। প্রতিদিন গোসলের আগে তা ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে আপনার রোদে পোড়া দাগ কমে যাবে সহজেই। 

৭। মধু ও দুধ

দুধে থাকা প্রাকৃতিক উপাদানগুলো ত্বকের রং গুলোকে ভেতর থেকে হালকা করে। সেই সঙ্গে এটি ত্বককে বাইরে থেকে আর্দ্র ও সমৃণ করে তোলে। প্রতিদিন ব্যবহারের ফলে ত্বক আরও উজ্জল হয়ে উঠে। দুই চামুচ মধু ও এক চামুক কাঁচা দুধ ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। ত্বকের কালো দাগের উপর লাগিয়ে রাখুন। ১০-১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে তা পরিস্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। প্রতিদিন ব্যবহারের ফলে মুখের কালো দাগ দূর হয়ে যাবে। এতে করে আপনার ত্বক আরও উজ্জল হয়ে উঠবে। 

FAQS-

# কি করলে ত্বক উজ্জ্বল হয়?

=>লেবু, কমলা, জাম্বুরা, মাল্টা এগুলো ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে দারুন কার্যকরী। কারণ এতে আছে ভিটামিন-সি, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং প্রয়োজনীয় ভিটামিন যা স্কিনকে হাইড্রেটেট রাখে আর ন্যাচারালি স্কিনকে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে।

# কিভাবে কালো থেকে ফর্সা হওয়া যায়?

=>এক চা চামচ কাচা হলুদ বাটা সাথে দুই চামচ লেবুর রস। দুই চামস লেবুর রস এবং কাঁচা হলুদ বাটা ভাল করে মিশিয়ে নিতে হবে। এবার শরীরের যেসব কালো ত্বক ফর্সা করার সেখানে হাত দিয়ে লাগিয়ে দিন। এভাবে মিশ্রণটি মেখে পনেরো থেকে বিশ মিনিট রেখে দিন।

# কিভাবে ফর্সা হওয়া যায়?

=>পরিমাণ মতো দইয়ে অল্প করে মধু এবং লেবুর রস মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে নিন। তারপর সেই পেস্টটি কম করে ১৫ মিনিট মুখে ম্যাসাজ করুন। সময় হয়ে গেলে মুখটা ধুয়ে নিন। মধু ত্বককে ভেতর থেকে সুন্দর করে তোলে। আর লেবুর রস এবং দইয়ে মিশ্রনে উপস্থিত ভিটামিন-সি ত্বককে উজ্জ্বল এবং ফর্সা করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

শেষ কথা

এছাড়াও পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমানোর প্রয়োজন। ঘুম শুধু আমাদের ক্লান্তি কাটাতেই নয়, ত্বকের সৌন্দর্য্য বাড়াতেও সাহায্য করে থাকে। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে তার প্রভাব পড়ে সামগ্রিক সুস্থতার উপরে। এর প্রথম ছাপটা বোঝা যায় আমাদের ত্বকের উপরে। উপর থেকে যতোই যত্ন করুন যদি আপনার পর্যাপ্ত ঘুম না হয় তাহলে আপনার ত্বক অকালে বুড়িয়ে যেতে বাধ্য। তাইতো ঘুমকে বিউটি স্লিপ বলা হয়। 

রূপচর্চায় কোনো কিছু না করলেও এই কয়েকটি নিয়ম অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে। একদম কোনো কিছু না করে সুন্দর ত্বক পাওয়া কখনোই সম্ভব নয়। সুতরাং নিয়ম মেনে এই কাজগুলো করলে সুন্দর ত্বক পাওয়া যাবে। 

# স্বাস্থ্যকর খাবার কি? স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার উপায় # অতিরিক্ত দুধ খেলে কি হয়? দুধের উপকারিতা ও অপকারিতা

Related posts

Leave a Comment