অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা কিভাবে দূর করবেন। দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির উপায়

অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা কিভাবে দূর করবেন। দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির উপায়

 

কোন বিষয়ে কষ্ট পেলে বা চিন্তা করতে থাকলে সেই চিন্তা দেহের স্বাভাবিক কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয়। ভারসাম্যের ব্যাঘাত ঘটায় দেহের হরমোনের। আমরা নিজেরাই আমাদের চাহিদাকে এতো বেশি করে ফেলি তার তুলনায় কম হলে মানসিক অবসাদ সৃষ্টি হয়। আর সেটা দিনের পর দিন বাড়তে থাকে। এই রকম চলতে থাকলে সেটা ডিপ্রেশনে রূপান্তরিত হয়।

ডিপ্রেশন কি?

বর্তমানে ডিপ্রেশন শব্দটি বহুল প্রচলিত। এটি শুধু শব্দ নয় এটি একটি মারাত্বক মানসিক রোগ। বর্তমান সময়ে মারাত্বক ভাবে ডিপ্রেশন বেড়েই চলেছে। মানুষের জীবনে হতাশার কোনো শেষ নেই। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ডিপ্রেশন মানুষের পিছু ছাড়ছে না। তবে মানুষের সবার ডিপ্রেশন কিন্তু এক নয়। মানুষের জীবনযাত্রার মান যেমন আলাদা ঠিক তেমনি ডিপ্রেশনও আলাদা হয়ে থাকে। আবার কেউ দুই মুঠো খেয়েও সুখে থাকতে পারে। তাই ডিপ্রেশনের সাথে অর্থের কোনো সম্পর্ক নেই। কোনো ব্যক্তি যদি ২ সপ্তাহ বা ১৪ দিনের বেশি মন খারাপ থাকে তবে তাকে ডিপ্রেশন বলে। এ ধরনের ডিপ্রেশনকে আবার ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশনও বলে। 

ডিপ্রেশনের লক্ষণ

আপনার ডিপ্রেশনের কারণ হতে পারে ব্রেকআপ বা আপনি আপনার ব্যবসায় অসফল হয়েছেন। হতে পারে আপনার পরীক্ষা ভালো হয় নাই বা অন্য যেকোনো কারণ হতে পারে। কিন্তু এখান বেরিয়ে আসার একটা রাস্তা আছে যা খুবই সহজ। আমাদের সবার ব্রেনে কিছু স্মৃতি থাকে, স্বপ্ন থাকে এবং কিছু অভ্যাস থাকে।

যখন আমাদের কিছু স্মৃতি বার বার মনে পড়ে তখন আমরা ডিপ্রেশনের দিকে যেতে থাকি। যখন আমাদের কোনো স্বপ্ন ভেঙে যায় তখন আমরা ডিপ্রেশনের দিকে যেতে থাকি। যেমন যখন আমরা স্বপ্ন দেখি যে আমি এটা করবো, ওর সঙ্গে থাকবো আর সেই স্বপ্নগুলো যখন ভেঙে যায় তখন আমরা ডিপ্রেশনে চলে যাই। মূলত আমাদের ডিপ্রেশন দুটো কারণে হয়ে থাকে। 

(১) হয় আমরা অতীতের কোনো স্মৃতি নিয়ে বেশি ভাবছি

(২) ভবিষ্যতের কোনো স্বপ্ন ভেঙে যাচ্ছে। 

এছাড়া ডিপ্রেশনে যাওয়ার কোনো কারণ নেই। আপনি বর্তমান সময়ে কখনো ডিপ্রেশনে যাবেন না। এটি একে বারে অসম্ভব। কিন্তু সব সময় বর্তমান সময়ে থাকাটাও খুব কঠিন। ডিপ্রেশনে অবসাদগ্রস্ত মানুষ জনের রক্তে ভিটামিন-ডি এর অভাব থাকলেও ডিপ্রেশন আসে। তবে ভিটামিন-ডি এর সাথে ডেফিশিয়েস এর মধ্যে অবসাদ বা ডিপ্রেশন সম্পর্ক নিয়ে আরো গবেষণার প্রয়োজন। 

ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির উপায়

ডিপ্রেশন থেকে বেরিয়ে আসতে হলে সর্ব-প্রথম আপনার চিকিৎসার প্রয়োজন এবং সাথে একজন খুব কাছের মানুষের প্রয়োজন। যে মানুষ তাকে খুব ভালো করে বোঝে, জানে এবং তার যত্ন নিতে পারবে এমন কোনো প্রিয় মানুষ একটু তার সঙ্গ দিলেই ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি পাওয়াটা খুব সহজ হয়ে উঠে। অনেকে বলে ডিপ্রেশন থেকে বেরিয়ে আসার জন্য মেডিটেশন করুন। তাহলে আপনি ডিপ্রেশন থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন। মেডিটেশন মানে হলো বর্তমানে থাকা।

এটা সত্যি মেডিটেশন করলে আপনি ডিপ্রেশনে যাবেন না। কিন্তু যখন আপনি ডিপ্রেশনের মধ্যে আছেন তখন কোনো ভাবে মেডিটেশন করতে পারবেন না। আপনি যদি খুব কষ্টে আছেন আর মেডিটেশন করার কথা ভাবছেন তাহলে আপনার জন্য এটি কোনো কাজে দিবে না। কারণ আপনি এখন সঠিক ভাবে মেডিটেশন করতেই পারবেন না। তাই এখন আমাদের কি করতে হবে? এখন আমাদের Hobbies এর দিকে যেতে হবে। মানুষের এক এক জনের Hobbies এক এক রকমের হয়।

যেমন আমার Hobbies হলো ঘুরে বেড়ানো। যখন আমাকে কেউ বলে চলো ঘুরে আসি তখন আমি মানা করতে পারি না। তখন সমস্ত পৃথিবী আমার জন্য নতুন মনে হয়। আমি যখন ঘুরে বেড়াই তখন আমার খুব ভালো লাগে। আর যখন ফিরে আসি তখন সবকিছু পরিবর্তন হয়ে যায়। এটাই আপনাকে করতে হয়। এমন বলবেন না যে আপনার কোনো Hobbies নেই। এমন মানুষ নেই যার পৃথিবীতে কোনো Hobbies নেই। তাই আপনাকে আপনার Hobbies খুঁজে বের করতে হবে।

সেটাতে আপনাকে কাজ করতে হবে। যেমন, আপনি ছবি আঁকতে ভালোবাসেন, আপনি ডান্স করতে ভালোবাসেন, আপনি খেলতে ভালোবাসেন, আপনি বই পড়তে ভালোবাসেন যাই হোক না কেনো সেটাকে করতে শুরু করুন। যে কারণে আপনার মন খারাপ সেটাকে আপনি না মনে করবেন, না সেটাকে ভুলতে চেষ্টা করবেন। শুধু সেটাকে Ignore করুন। অতীতের কোনো কিছু মনে পড়ছে আপনার Hobbies লাগান। আপনার Passion এ লাগান।

কারণ মানুষের কাছে তার Passion এর থেকে দামী কিছু নেই। আপনি শুধু এটুকু করুন আপনার ডিপ্রেশন এমনিতেই ঠিক হয়ে যায়। আপনার যদি কোনো Hobbies খুঁজে পাচ্ছেন না তাহলে আপনার মোবাইলের চ্যালেঞ্জিং গেম খেলুন। কিন্তু এটি তখনই করবেন যখন কোনো Hobbies পাচ্ছেন না। কারণ এতে আপনার সময় নষ্ট হবে। কিন্তু আপনি যদি আপনার Passion এর দিকে কাজ করেন তাহলে এটি আপনাকে আপনার লক্ষ্যের দিকে নিয়ে যাবে।

শুধুমাত্র আপনি যদি ডিপ্রেশন থেকে বেরিয়ে আসতে চান তাহলে কিছু দিনের জন্য গেম খেলতে পারেন। এছাড়া আপনি মিউজিক শুনতে পারেন। কিন্তু মনে রাখবেন কখনো sad songs শুনবেন না। এতে আপনার মন আরো sad হয়ে যাবে। এই জীবনটাকে উপভোগ করতে শিখুন। নিজেকে বলুন ডিপ্রেশন বলতে কিছু হয় না। তাই ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি পেতে হলে নিজের মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। 

শেষ কথা

ডিপ্রেশন একটি জটিল ব্যাধির নাম। তাই সময় মতো এটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে এটি জটিল থেকে জটিলতর আকার ধারণ করতে পারে। তাই সময় থাকতেই আপনাকে নিজ থেকেই এই বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। জীবনে সমস্যা থাকবেই। তবে আপনি চাইলেই আপনার জীবনকে সুখ আর সুন্দর ও সুশৃঙ্খল করতে পারেন। সময়মত ইতিবাচক ভাবে চিন্তা করুন ও জীবনকে রাখুন বিষন্নতামুক্ত। তাই নিজের জীবনের যতো সমস্যা গোপন করে না রেখে বরং সসস্যাটি সম্পর্কে জানুন এবং যত দ্রুত সম্ভব সমাধান করে ফেলা উচিত। 

# আপনি কি নিজের উপর বিশ্বাস রাখেন? নিজের উপর বিশ্বাস রাখো! # জীবনে সফল হওয়ার উপায়। জীবনে সফল হওয়ার জন্য কি করা উচিত? 

Related posts

Leave a Comment