কিভাবে মোটা হওয়া যায়? মোটা হওয়ার সহজ উপায়!

কিভাবে মোটা হওয়া যায়? মোটা হওয়ার সহজ উপায়!

 

অতিরিক্ত ওজন যেমন বিভিন্ন স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায় ঠিক তেমনি স্বাভাবিকের চেয়েও কম স্বাস্থ্য হলে সেটিও শঙ্কার কারণ হতে পারে। মোটা হলে যেমন নিজের কাছে অস্বস্তি লাগে তেমনি অতিরিক্ত চিকন হলেও দেখতে বেমানান লাগে। সুষম খাদ্যাভ্যাস মানা এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা ওজন বাড়ানোর জন্য আবশ্যক। অনেকেই আছেন যারা মোটা হওয়ার জন্য অনেক কিছুই ট্রাই করে থাকেন কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই তারা কোনো উপকার পাচ্ছেন না। বয়স এবং উচ্চতার তুলনার ওজন কম হওয়া খুবই সমস্যার ব্যাপার। তাই কখনো কখনো মোটা হওয়াও জরুরী।

মোটা হওয়ার সহজ উপায় 

’স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল’। বর্তমান যুগে সবাই সুন্দর শারীরিক গঠন চায়। আশ্চর্য হলেও সত্যি যে সমাজে মোটা হলে যেমন কটু কথা শুনতে হয় ঠিক তেমনি ওজন একটু কম হলেও একই ধরণের পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়। তবে একটা কথা বলে রাখি যে মোটা হওয়া কিন্তু ভালো নয়। সত্যিকার অর্থে মোটা স্বাস্থ্য খুবই ক্ষতিকর। শরীরের গঠন মোটা বা চিকন এ নিয়ে সকলেরই কথা শুনতে হয়। মোটা হতে হলে আপনাকে নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। একটু মন থেকে চেষ্টা করলে আপনি সহজে মোটা হতে পারবেন।

খাদ্য অভ্যাস পরিবর্তন

মোটা হতে চাইলে সব চাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ঠিক মতো খাবার খাওয়া। কারণ এটি স্বাস্থ্যবান হওয়ার আসল উপায়। আপনি যত চেষ্টাই করুন না কেনো খাবার না খেলে আপনি কখনোই মোটা হতে পারবেন না। তাই আপনাকে মোটা হতে হলে আপনাকে অবশ্যই আপনার খাদ্য অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে।

নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া

মোটা হওয়ার উপায়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপায় হচ্ছে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া। অর্থাৎ, আপনাকে নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। বেঁচে থাকার জন্য খাদ্যের ভূমিকা অপরিসীম। আপনি যেমন না খেয়ে থাকলে অসুস্থ্য হয়ে পড়বেন ঠিক তেমনি স্বাস্থ্যকর খাবার না খেয়ে থাকলেও অসুস্থ্য হয়ে পড়বেন। অর্থাৎ আপনাকে নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। তবে কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও দ্রুত কার্যকরী সেগুলো নিয়মিত খাওয়া উচিত।

ব্যায়াম করা

আমরা সাধারণত স্বাস্থ্য কমানোর জন্য বা চিকন হওয়ার জন্য ব্যায়াম করে থাকি। কিন্তু এই ধারণা মোটেও ঠিক না। ওজন কমানোর জন্য যেমন ব্যায়াম করা প্রয়োজন হয় ঠিক তেমনি ওজন বৃদ্ধির জন্যও ব্যায়াম করা খুবই প্রয়োজন। আপনি যদি নিয়মিত ব্যায়াম করেন তাহলে আপনার ফিটনেস অন্যরকম দেখাবে। প্রতিদিন আপনাকে ব্যায়াম করতেই হবে ওজন বৃদ্ধির জন্য। আবার ওজন বাড়াতে গেলে শুধু দৌড় বা জগিং যথেষ্ট নয়। দরকার জিমে গিয়ে ওয়েট লিফটিং। তাই শুধু খাবার খেলেই চলবে না আপনাকে অবশ্যই ব্যায়াম করতে হয়। খাবারের পাশাপাশি ফিটনেস ভালো রাখার জন্য জিম অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

বার বার খাবার গ্রহণ

প্রতিটি মানুষেরই বার বার খাবার গ্রহণ করা উচিত। যারা ওজন বৃদ্ধির করতে চান তারা প্রতি ২ ঘন্টা পর পর বেশি খেতে পারেন। এ সময় আপনি দুধ, ফল ইত্যাদি খেতে পারেন। এগুলো আপনার শরীরে পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি ওজন বৃদ্ধি পাবে। এটি মোটা হওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায়। তাই মোটা হওয়ার জন্য বার বার খাবার গ্রহণ করতে হবে।

পর্যাপ্ত ঘুম

সুস্থ্য থাকতে হলে নিয়মিত ঘুমের বিকল্প নেই। কারণ সারা দিনের ক্লান্তি দূর করে থাকে ঘুম। তাই শরীর ঠিক রাখতে ঘুম খুবই প্রয়োজন। প্রতিদিন অবশ্যই ৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে। এর থেকে কম হওয়া যাবে না। এছাড়া ঘুম থেকে উঠে প্রতিদিন ইয়োগা করুন। এর ফলে আপনার ওজন দ্রুত বৃদ্ধি পাবে।

স্বাস্থ্য দ্রুত মোটা করার জন্য খাবার

চিকন এবং পাতলা স্বাস্থ্য দ্রুত মোটা এবং সুস্বাস্থ্যবান করতে অবশ্যই আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। আর আপনাকে অবশ্যই পূর্বে যে পরিমাণ খাবার খেতেন তার থেকে বেশি পরিমাণে খাবার এখন খেতে হবে। তবে সকলের একটি কমন সমস্যা হচ্ছে খাবারের প্রতি রুচি না থাকা। খাবারের রুচি না থাকলে কোনো প্রকার রুচির ঔষধ খাবেন না। এগুলো অনেক ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে।

তাই আমার সকলের প্রতি অনুরোধ থাকবে খাবারের রুচি বৃদ্ধির জন্য কোনো প্রকার ঔষধ সেবন করবেন না। স্বাস্থ্য মোটা এবং সুস্থ্য রাখতে আপনি একসাথে প্রচুর খাদ্য গ্রহণ না করে তিন বেলার জায়গায় চার বেলা বা আরো বেশি খেতে পারেন। এতে আপনার স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটবে। সুস্বাস্থ্যবান থাকতে এবং স্বাস্থ্য কিছুটা মোটা করতে সাধারণ কিছু খাবারই যথেষ্ট।

ডিম

ডিম এমন একটি প্রাণিজ আমিষ জাতীয় খাবার যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এটি ওজন বাড়ানোর জন্য ভরসাযোগ্য একটি উপাদান। ডিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং ক্যালরি যা আপনার স্বাস্থ্যের দ্রুত ‍উন্নতি ঘটাবে। তাই প্রতিদিন ডিমের সাদা অংশ খান। তবে কাঁচা ডিম খাবেন না। এত অনেক রকম সমস্যা হওয়া সম্ভাবনা থাকে। আবার তেলে ভাঁজা ডিমও খাবেন না। ডিম তেলে ভাঁজি করলে ডিমের অনেক পুষ্টি উপাদান নষ্ট হয়ে যায়। তাই সেদ্ধ করা ডিমের সাদা অংশ খাওয়াই উচিত।

দুধ

আমরা জানি দুধে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এবং প্রোটিনসহ অনেক পুষ্টি উপাদান যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত জরুরী। দুধে রয়েছে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ যা শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দুধের এতো উপকারিতার জন্য দুধকে ‘সুপার ফুড’ বলা হয়ে থাকে। স্বাস্থ্যের দ্রুত উন্নতি ঘটাতে এবং মোটা হতে চাইলে অবশ্যই নিয়মিত দুধ পান করবেন।

আবার দুধকে ‘সুপার ফুড’ বলা হয়ে থাকে। দুধে রয়েছে পুচুর প্রোটিন, চর্বি, ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৬ অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। দুধে রয়েছে মানবদেহের প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ যা শরীরের জন্য খুবই জরুরী। স্বাস্থ্যের খুব দ্রুত উন্নতি ঘটাতে এবং দ্রুত মোটা হতে হলে অবশ্যই নিয়মিত দুধ পান করবেন।

কিসমিস

কিসমিস সুস্থ্য উপায়ে আপনার দেহের ওজন বাড়াতে সাহায্য করে থাকে। জলে ভেজানো কিসমিস শরীরের জন্য খুবই উপকারী। কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফ্রুক্টোজ, গ্লুকোজ এবং প্রোটেনশিয়াল এনার্জি। আর এ জন্য বডি বিল্ডারদের ক্ষেত্রে কিসমিস খেতে বলা হয়। ওজন বাড়ানোর জন্য কিসমিস খেলে সুস্থ্যভাবে ওজন বাড়ানোর উপকারিতা পাওয়া যায়। তাই আপনি যদি স্বাস্থ্যকরভাবে আপনার ওজন বাড়াতে চান তাহলে নিয়মিত কিসমিস খেতে পারেন।

গরুর মাংশ

আপনি যদি মোটা হতে চান তাহলে বেশি করে গরুর মাংশ খান। বেশি পরিমাণে গরুর মাংশ খাওয়াও একটি মোটা হওয়ার টিপস। গরুর মাংশের যেমন রয়েছে অনেক উপকারিতা তেমনি রয়েছে এর অনেক খারাপ দিক। যাদের ডায়াবেটিকস, অ্যালার্জি রয়েছে তাদের জন্য গরুর মাংশ

ফলমূল এবং শাকসবজি

ফলমূল এবং সবুজ শাকসবজি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। দ্রুত মোটা হওয়ার তাই অবশ্যই ফলমূল খাবেন। একজন সুস্থ্য মানুষের জন্য প্রতিদিন ফল খাওয়া প্রয়োজন। তবে অবশ্যই চেষ্টা করবেন আপনার খাদ্য তালিকায় যেনো ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ফল রাখার জন্য। আর আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ফলমূল কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা আমরা সকলেই জানি। এছাড়া খাদ্য তালিকায় অবশ্যই সবুজ শাকসবজি রাখবেন। কারণ সবুজ শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং পুষ্টি গুণাগুণ রয়েছে যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। তাছাড়া সবুজ শাকসবজি আমাদের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে সাহায্য করে থাকে।

মোটা হওয়ার জন্য যেসব ভুল করবেন না

#মোটা হওয়ার জন্য কোনো প্রকার ওষুধের সাহায্য নেওয়ার প্রয়োজন নেই। ওষুধ বা অন্য কোনো খাদ্য গ্রহণ করতে হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে তা সেবন করুন।

#অনেকে ওজন বাড়ানোর জন্য পিৎজা, বার্গার ইত্যাদি খেয়ে থাকেন। সাথে অনেক তেলে ভাজা-পোড়া খেয়ে থাকেন। কিন্তু এসব আমাদের শরীরের অনেক ক্ষতি করে থাকে।

#অনেকে মোটা হওয়ার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই বিভিন্ন প্রকার ওষুধ সেবন করে থাকেন। এর ফলে আমাদের শরীরে নানারকম জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। যার ভোগান্তি আমাদেরকে সারাজীবনের জন্য ভোগান্তিতে পড়তে পারেন।

শেষ কথা

আজকাল এই আধুনিক যুগে সবাই স্বাস্থ্য সচেতন। হোক সে মোটা কিংবা হোক সে চিকন। আমরা সচারাচর চিকন বা স্লিম হতে চাই এই কথাটি বেশি শুনে থাকি। কিন্তু যারা একটু বেশি রোগাটে বা চিকন তাদের ক্ষেত্রে উল্টো। আমরা যেকোনো উপায়ে মোটা হতে পারি। তবে একটা বিষয় মাথায় রাখবেন অতিরিক্ত শুকনা যেমন কাম্য নয় ‍ঠিক তেমনি অতিরিক্ত মোটা হওয়া কিন্তু কারো কাম্য নয়। আর মোটা হতে গিয়ে যদি চর্বি বেড়ে যায় তাহলে কিন্তু হিতে বিপরীত হয়ে যেতে পারে। উপরের আলোচনার সবকিছু মেনে চলার পর যদি আপনি মোটা হতে না পারেন তাহলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন।

# ব্রণ কেনো হয়? দ্রুত ব্রণ দূর করার উপায় সমূহ # কিভাবে ওজন কমানো যায়? দ্রুত ওজন কমানোর সহজ উপায়

Related posts

One Thought to “কিভাবে মোটা হওয়া যায়? মোটা হওয়ার সহজ উপায়!”

Leave a Comment